মালদহে গঙ্গার জল ক্রমশ বাড়ছে। সেই সঙ্গে রতুয়া ১ থেকে মানিকচক ও কালিয়াচক ৩ ব্লকের একাধিক জায়গায় চলছে গঙ্গা ভাঙন। ভাঙনে গঙ্গাপারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। এ দিকে, রতুয়ার মহানন্দাটোলা পঞ্চায়েতের বাংলা-বিহার সীমান্তে থাকা শ্রীকান্তটোলায় ভাঙন মারাত্মক আকার নিয়েছে। সেই এলাকা রবিবার যৌথ পরিদর্শনে যান মালদহ ও বিহারের কাটিহার জেলার সেচ আধিকারিকরা। সঙ্গে চাঁচলের মহকুমাশাসক ও রতুয়া ১-এর বিডিও ছিলেন। শ্রীকান্তটোলা এবং তার উজানে বিহারের এলাকায় যৌথ ভাবে বাংলা ও বিহার কাজ না করলে গঙ্গা ভাঙন ঠেকানো মুশকিল বলে দাবি সেচ কর্তাদের।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, রবিবার গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৪.২৪ মিটার। যা বিপদসীমার চেয়ে ০.৪৫ মিটার কম। তবে বিহারে গঙ্গার জলস্তর অনেকটাই বেশি। বিহারের হাতিদহতে গঙ্গা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সেই জল যখন নেমে মালদহে আসবে তখন এখানেও গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যাবে। জল বাড়ায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। এই মুহূর্তে রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা পঞ্চায়েতের শ্রীকান্তটোলা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হচ্ছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কিরণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘শুখা মরসুমে সেচ দফতরের তরফে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ হয়নি। এখন অস্থায়ী কাজ হলেও তাতে ভাঙন কতটা রোখা যাবে তা নিয়ে বাসিন্দারা সন্ধিহান। ফলে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে।’’ এ দিন দুপুরে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে যান সেচ দফতরের উত্তর মণ্ডলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার গোরাচাঁদ দত্ত, সুপারিন্টেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ ভট্টাচার্য, মালদহ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিহারের কাটিহার ডিভিশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ও এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারেরা। শ্রীকান্ত টোলার পাশাপাশি উজানে থাকা বিহারের আমদাবাদ জেলার ভাঙন কবলিত এলাকা এ দিন লঞ্চে করে পরিদর্শন করেন ওই আধিকারিকেরা। সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘শ্রীকান্তটোলায় অস্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করছি। কিন্তু বিহারের দিকে কাজ না করলে এ দিকে ভাঙন ঠেকানো মুশকিল। বিহারের দিকে কাজ হবে কি না সে ব্যাপারে ওই আধিকারিকেরা জানিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।’’ কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারলালপুরে রাধাগোবিন্দ মন্দিরের উজান থেকে গোলাপ মণ্ডলপাড়া পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ছ’টি জায়গায় অন্তত ৪০০ মিটার এলাকা জুড়ে গঙ্গা ভাঙন চলছে। সেখানেও আতঙ্কে বাসিন্দারা।