• রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী পড়ে নিউ টাউনেও, আটকে নিকাশির মুখ
    আনন্দবাজার | ২১ জুলাই ২০২৫
  • নামে সবুজ শহর হলেও রাস্তায় যত্রতত্র নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকা আটকানো যায় না নিউ টাউনে। বিষয়টি এ বার মাথাব্যথার কারণ হচ্ছে বাসিন্দাদের। অভিযোগ, প্রোমোটারেরা বালি, পাথর কুচি ফেলে রাখছেন রাস্তায়। আর সেই বালি গিয়ে পড়ছে রাস্তার ধারের গালিপিটে। তার জেরে গালিপিটের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিউ টাউনের মতো পরিকল্পিত শহরেও প্রতি বর্ষায় জলযন্ত্রণায় ভুগতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

    নিউ টাউনের বহু জায়গাতেই ফাঁকা জমিতে নির্মাণের কাজ চলছে। সেই নির্মাণ কখনও আবাসনের, কখনও বড় বড় বেসরকারি সংস্থার অফিসের। তার জেরে বিপুল পরিমাণে নির্মাণ সামগ্রী নিউ টাউনের রাস্তায় বিভিন্ন সময়ে নামানো হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক জায়গায় পড়ে থাকছে স্টোন চিপস, বালি-সহ অন্য সামগ্রী।

    আবাসিকদের সংগঠন, নিউ টাউন সিটিজেন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি জানাচ্ছে, বিষয়টি তারা নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)-কে একাধিক বার জানিয়েছে। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি। সংগঠনের সম্পাদক সমীর গুপ্তের কথায়, ‘‘নিউ টাউন গ্রিন সিটি। আবাসিক এলাকার পাশাপাশি রয়েছে বহু আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অফিস। বহু বিশিষ্ট মানুষের বসবাস এবং যাতায়াত এখানে। এমন একটি শহরে প্রতি বছর একটু ভারী বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যায়। কোথাও কোথাও হাঁটুজলও থাকে।’’

    আবাসিকেরা জানান, এমনিতেই নিউ টাউন ফাঁকা। তাই সব সময়েই হাওয়া দেয়। হাওয়ায় বালি আর পাথর কুচির ধুলো উড়ে গিয়ে পড়ে রাস্তার ধারের গালিপিটে। কোথাও কোথাও রাস্তার ধারে নির্মাণ সামগ্রী ফেলার সময়ে খেয়াল রাখা হয় না যে গালিপিট আটকে যাচ্ছে কি।না। এর জেরে নিউ টাউনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকাও বিভিন্ন সময়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষত প্রাইড হোটেল, ক্লক টাওয়ার, অ্যাক্সিস মল-নোভোটেল মোড়ের মতো এলাকায় বেশি জল জমে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।

    উল্লেখ্য, গ্রিন সিটির তকমা অনেক দিন আগেই পেয়েছে নিউ টাউন। তার প্রতীক হিসেবে সেখানে দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে সাইকেল চালানোয়। আলাদা করে সাইকেল বে তৈরি করা হয়েছে। এক সময়ে হিডকো ব্যাটারিচালিত বাস পথে নামিয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় ই-চার্জিংয়ের স্টেশনও তৈরি করেছে। তা সত্ত্বেও কিছু মানুষেরঅবহেলার কারণে সবুজ শহরের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে নিউ টাউনে, এমনই অভিযোগ সেখানকার বাসিন্দাদের। তারই নমুনা নির্মাণ সামগ্রীর কারণে গালিপিট আটকে যাওয়া, এমনটাই দাবি তাঁদের।

    এই অভিযোগ সত্যি বলে অবশ্য মেনে নিয়েছে এনকেডিএ। তারা জানাচ্ছে, নির্মাণ সামগ্রী নির্মাণস্থলের বাইরে আসবে না, এটাই নিয়ম। জল জমার কথা মেনে নিয়ে এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘নর্দমার ভিতরের অংশ পরিষ্কার থাকায় জল বেশি ক্ষণ জমেনি নিউ টাউনে। তবে এটা ঠিক, কোথাও কোথাও গালিপিট নির্মাণ সামগ্রীর কারণে বন্ধ হয়ে যায়। যাদের নির্মাণের জন্য এমনটা হচ্ছে, তাদের নোটিস দেওয়া হচ্ছে নির্মাণ সামগ্রী নির্মাণস্থলের ভিতরে জড়ো করার জন্য। নির্দেশ না মানলে জরিমানাও করা হচ্ছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)