পরনে সাদা বা সবুজ! শাসকদলের ‘শহিদ স্মরণ’ মঞ্চে শ্রাবন্তী, রিমঝিম, ভরত-সহ টলিপাড়ার বহু মুখ
আনন্দবাজার | ২১ জুলাই ২০২৫
‘দিদি’ ডেকেছেন প্রত্যেক বছরের মতো। প্রতি বারের মতো এ বারও তাই ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে উপস্থিত বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরা। তালিকায় নতুন সংযোজন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, রূপাঞ্জনা মিত্র। দুই অভিনেত্রী এর আগে বিরোধী পদ্ম শিবিরে ছিলেন। আনন্দবাজার ডট কমকে ভরত কল বলেছেন, “বিনোদন দুনিয়া সব সময় ‘দিদি’র পাশে। এ বছর ঘরে ফিরলেন দুই কন্যা শ্রাবন্তী, রূপাঞ্জনা। আমাদের লক্ষ্য, ২০২৬-এ মুখ্যমন্ত্রীর হাত আরও শক্ত করা।”
২০ জুলাই টলিপাড়ার একাধিক তারকা জানিয়েছিলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরেও তাঁরা নন্দনে জড়ো হবেন। সেখান থেকে বাসে চড়ে আসবেন ধর্মতলায়। সোমবার সকাল সওয়া ১০টা— নন্দন চত্বরে প্রথম পা রাখলেন বিধায়ক লাভলী মৈত্র। একটু পরেই তাঁকে অনুসরণ করে সেখানে উপস্থিত অভিনেতা ও শাসকদল ঘনিষ্ঠ ভিভান ঘোষ। পিছনে একটু দূরে দোলন রায়। সঙ্গী আনন্দবাজার ডট কম। উপরে উঠতেই দেখা গেল তত ক্ষণে উপস্থিত অভিনেত্রী-প্রযোজক, রাজনীতিবিদ পিয়া সেনগুপ্ত, সাংসদ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রিমঝিম মিত্র, রূপাঞ্জনা মিত্র, সৌমিতৃষা কুণ্ডু, সোমা চক্রবর্তী, সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়-সহ ছোট এবং বড় পর্দার অভিনেত্রীরা।
প্রত্যেকে জানালেন, একপ্রস্ত শুটিং সেরে বিকেল ৩টে পর্যন্ত ছুটি নিয়ে ‘দিদি’র কাছে এসেছেন। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ তাঁদের কাছে আবেগ। কেউ শুরু থেকে, কেউ বা গত কয়েক বছর ধরে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলের ‘শহিদ স্মরণ’ সমাবেশে। সায়ন্তিকা যেমন বললেন, “১৯৯৩-এ যাঁরা শহিদ হয়েছিলেন তাঁদের একজন আমার বরাহনগর কেন্দ্রের। তাঁর পরিবারের পাশে দিদি এবং দল কী ভাবে দাঁড়িয়েছেন, জানি। বাকি প্রত্যেক শহিদের পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুগ্রহ পেয়েছেন। এ দিন তাঁদের স্মরণ করার দিন।”
প্রত্যেকে এ দিন সংযত হয় সাদা নয় সবুজ পোশাকে। ভারত কল, দিগন্ত বাগচী, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, পিয়া সেনগুপ্ত, সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়, সোনামণি সাহা, তিয়াসা লেপচা, শ্রীতমা ভট্টাচার্য, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, ত্বরিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌপ্তিক চক্রবর্তী-সহ অধিকাংশ অভিনেতা সাদা পোশাক বেছে নিয়েছিলেন। এ দিন কালো পোশাক বেছে নিয়েছিলেন পরিচালক অরিন্দম শীল, সোমা চক্রবর্তী। গেরুয়া রঙে ঝলমল সৌমিতৃষা। লাভলি, রণিতা-সহ কয়েক জন কেউ সবুজ, কেউ প্যাস্টেলরঙা পোশাকে স্নিগ্ধ। কেউ যাতে শুধু মুখে মঞ্চে এবং সমাবেশে না থাকেন সে দিকেও ছিল কড়া নজর। নন্দনে তাঁদের জন্য সকালের জলখাবারে ছিল ফল, মিষ্টির আয়োজন। কালো চা, কফির কাপ ঘুরেছে প্রত্যেকের হাতে।
আগামী বছর বিধানসভার নির্বাচন। তাই এ বছরের ২১ জুলাই শাসকদলের কাছে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সমাবেশ মঞ্চ থেকে কী আশা করছেন পিয়া? সুখেন দাস-কন্যার কথায়, “প্রত্যেক বারের ২১ জুলাই আমাদের কাছেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বছর আরও বেশি। আমরা মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে। তাঁদের নির্দেশের অপেক্ষায়।” এ বারের জুলাই মঞ্চ কি পিয়ার কাঁধে গুরু দায়িত্ব সঁপতে চলেছে। রাজনীতিবিদ-অভিনেত্রীর সাফ দাবি, তিনি এ সব নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত নন। একই কথা শোনা গেল সৌমিতৃষার মুখ থেকেও। তিনি রাজনীতিতে যোগদানের কথা উড়িয়ে দিলেন। বললেন, “দিদি যখনই ডেকেছেন উপস্থিত থেকেছি। শরীরখারাপ নিয়েই এসেছি। ব্যাগে ওষুধ আছে।” সুভদ্রা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর থেকে বাংলা বিনোদন দুনিয়া যা পেয়েছে তা এক কথায় বর্না সম্ভব নয়। সম্মান, সমর্থন সমস্ত পেয়েছেন তাঁরা। সেই টানেই প্রত্যেক বছর প্রত্যেকে এই সমাবেশে যোগ দেন।
কথোপকথনের মধ্যেই ঘড়ির কাঁটা সোয়া এগারোটা। নন্দন চত্বর থেকে একটু দূরে একাধিক বাস দাঁড়িয়ে। খ্যাতনামীরা সারি বেঁধে উঠলেন তাতে। তদারকিতে ভরত, অরিন্দম, দিগন্ত। “ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। শুটিংয়ের চাপের কথা কারও অজানা নয়। সমাবেশ সেরে আবার শুটিংয়ে ফিরব”, বাসে ওঠার আগে স্মিত হেসে বললেন তৃণা সাহা।