সব বলব, কিন্তু ‘জয় বাংলা’ বলব না! অভিষেককে জবাব দিলীপের, তৃণমূলে যাওয়ার জল্পনা নিয়ে কী বললেন?
আনন্দবাজার | ২১ জুলাই ২০২৫
সমস্ত জল্পনার অবসান। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে এলেন না দিলীপ ঘোষ। ছিলেন খড়্গপুরে বিজেপির ‘শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ কর্মসূচিতে। শুধু তা-ই নয়, স্পষ্ট জানিয়েও দিলেন, তিনি কোনও দিন তৃণমূলে যোগ দেবেন না। এ-ও বললেন, ‘‘সব বলব। কিন্তু জয় বাংলা বলব না।’’ ঘটনাচক্রে, তার কিছু ক্ষণ আগে ধর্মতলার মঞ্চ দাঁড়িয়ে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, ‘‘২৬-এর নির্বাচনের পর ওদের দিয়ে জয় বাংলাও বলাব।’’
২১ জুলাই দিলীপকে কোন মঞ্চে দেখা যাবে, তা নিয়ে গত সপ্তাহ দুয়েক ধরেই নানা জল্পনা চলছিল। দিলীপ নিজে বলছিলেন, ‘‘২১ জুলাই কোনও না কোনও মঞ্চে তো আমাকে দেখা যাবেই। উত্তর ২১ জুলাইতেই পেয়ে যাবেন।’’ রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির এই মন্তব্যের নানা ব্যাখ্যা নানা মহল থেকে করা হচ্ছিল। ফলে দিলীপকে নিয়ে জল্পনা ক্রমশ বাড়ছিল। কিন্তু ১৮ জুলাই বঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সফরের দিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার ডাকে দিলীপ দিল্লি রওনা দেওয়ায় সে সব জল্পনা অনেকটাই মিইয়ে যায়। আর দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে দিলীপ যখন জানিয়ে দেন যে, ২১ জুলাই খড়্গপুরে সভা করবেন, তখন যাবতীয় গুঞ্জনে ইতি পড়ে। সোমবার খড়্গপুরে সভার পর দিলীপ বলেন, ‘‘যারা দিলীপ ঘোষকে তৃণমূলে পাঠাচ্ছিল, তারা কি এ বার গঙ্গায় ঝাঁপ দেবে, না বটগাছের গোড়ায় গলায় দড়ি দেবে। কাল থেকে দেখুন।’’
ঘোষণামতোই সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ খড়্গপুরের গিরি ময়দানে দিলীপের ডাকে জমায়েত হয়েছিল। সেখান থেকে দিলীপ বলেন, ‘‘তৃণমূল দুর্নীতিগ্রস্তদের দল। বিজেপি মাটিতে পা রেখে চলে। লড়াই চলবে। নিজের কব্জির জোর আর পদ্ম ফুলে বিশ্বাস রাখুন। জগন্নাথ মন্দির করলেই হিন্দু হওয়া যায় না।’’
প্রসঙ্গত, দিলীপ দলের রোষে পড়েইছিলেন দলের কথা না-শুনে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সস্ত্রীক দিলীপের কথোপকথনের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছিল বিজেপি। তার পর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব। বিজেপির কোনও কর্মসূচিতেও ডাক পেতেন না দিলীপ। তখন থেকেই জল্পনা শুরু, এ বার তৃণমূলে নাম লেখাতে পারেন দিলীপ। যদিও বাস্তবে তা হল না। উল্টে যে দিন তিনি তৃণমূলে যোগদান করতে পারেন বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল, সেই ২১ জুলাইয়েই দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘‘নবান্নে যত দিন না বিজেপির কোনও নেতা বসছেন, তত দিন আন্দোলন চলবে।’’
ধর্মতলার মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জগন্নাথধামের মতো দুর্গাঅঙ্গণও তৈরি করবেন তিনি। এ নিয়েও মমতাকে আক্রমণ করে দিলীপ বলেন, ‘‘ভগবানের আশীর্বাদে বা জগন্নাথের আশীর্বাদে উনি জিততে পারবেন না। বাংলার জনতা জনার্দন খুবই জাগ্রত। মন্দির করে তাঁদের বাঁকানো যাবে না। বাংলায় মন্দিরের কোনও অভাব নেই। আপনি প্রশাসন ঠিক ভাবে চালান।’’