• একাধিক বৈঠকের পরও দুর্ঘটনায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না রেল? ক্ষুব্ধ বনদপ্তর
    প্রতিদিন | ২২ জুলাই ২০২৫
  • সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বার বার সমীক্ষা। একাধিকবার প্রস্তাব পাঠানো সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি রেল। রেলমন্ত্রক এবং রাজ্য ফরেস্টের পক্ষ থেকেও বছর দেড়েক আগে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের রেললাইনের ক্রিটিক্যাল স্ট্রেচেস (ঝুঁকিপূর্ণ হাতির পারাপার ক্ষেত্র) এলাকায় যৌথ সমীক্ষায় উঠে এসেছিল লাইনে হাতি মৃত্যু ঠেকাতে নানা প্রস্তাব। এছাড়াও ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের পক্ষ থেকে গত দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে তিনবার সড়ডিহা এবং বাঁশতলার মাঝে সমীক্ষা করা হয়েছে। সেই সমীক্ষাগুলির পরেও ওভারপাশ, সফট পেডিং, গার্ডরেল সরানো, ড্রেনগুলি ঢাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বনদপ্তরের বক্তব্য, রেল কী করণীয় জানলেও, এই রাজ্যে দুর্ঘটনায় হাতিমৃত্যু আটকাতে ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আর এক্ষেত্রেও বাংলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে অভিযোগ উঠছে।

    বনদপ্তরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে ২৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট, মিনিস্ট্রি অব এনভার্নমেন্ট, ফরেস্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ, মিনিস্ট্রি অফ রেলওয়েস, ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট একযোগে সমীক্ষা করেছিল উত্তরবঙ্গ রিজিয়ানের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং দক্ষিণবঙ্গ রিজিয়ানের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গুলির রেলপথে হাতির নির্দিষ্ট পারাপারের জায়গাগুলির উপরে। হাতির ক্ষেত্রে রেললাইনের এই পথ যে সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ, তা বার বার সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ঝাড়গ্রাম বনদপ্তরের দাবি, রেলওয়ে জানে অবিলম্বে কী করা যেতে পারে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে রেল টালবাহানা চালাচ্ছে। জানা গিয়েছে, হাতির রেল লাইন পারাপারের জন্য মাটি, রাবিশ জাতীয় উপকরণ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা (সফট পেডিং), ড্রেনের মুখ স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে দেওয়া, লাইনের পাশে থাকা গার্ড রেল গুলিকে সরিয়ে ফেলা, ট্রেনের গতি কমানোর মতো বিষয়গুলি রেল দ্রুত করতেই পারে। এটা করলে অবিলম্বে সমস্যা অনেকটাই মিটবে। আন্ডারপাশ বা ওভারপাশ করার বিষয়টি অবিলম্বে না হলেও এগুলি করাই যেতে পারে বলে বনদপ্তরের বক্তব্য।

    সড়ডিহা থেকে বাঁশতলার মধ্যে আন্ডারপাশ করা সম্ভব নয়। এখানে হাতিদের চলাচলের জন্য ওভারপাশ করতে হবে। এই দাবি রেলকে আগেই জানানো হয়েছে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। বারবার বৈঠক, পরিকল্পনা, প্রস্তাব পাঠানো সব হলেও কোনও একটি ক্ষেত্রেও, তা কার্যকর এতদিনেও করা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে ট্রেনলাইনে দুর্ঘটনায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছেই। দিন কয়েক আগে মর্মান্তিকভাবে তিনটি হাতির মৃত্যুর পর ফের বৈঠক হয়েছে। আবারও সমাধনসূত্র হিসেবে অতীতের দাওয়াই উঠে এসেছে। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “বছর দেড়েক আগে রেল এবং বনদপ্তরের যৌথ সমীক্ষ হয়েছে এলাকায়। বনদপ্তর গত দেড় বছরে তিনবার এই এলাকায় সমীক্ষা করেছে। প্রতিবারই আমরা প্রস্তাব পাঠিয়ে চলেছি। কিন্তু রেল কোনও পদক্ষেপ করছে না। ওভারপাশ করার বিষয়টিও আমরা অনেকবার প্রস্তাবে বলেছি।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)