‘১৮টা এমপি দিয়েছিলাম, এখন সিট কমছে’, খড়গপুরে দাঁড়িয়ে ‘ব্যর্থ’ রাজ্য নেতৃত্বকে বার্তা দিলীপের?
প্রতিদিন | ২২ জুলাই ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুভেন্দুর উত্তরবঙ্গের কর্মসূচির দিন, বিজেপির ‘আদি’ নেতাদের নিয়ে পালটা কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার তাঁর নিজের ভূমিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের অবস্থা নিয়ে নব্য বিজেপিকে কার্যত তুলোধোনা করলেন দিলীপ। বলেন, “২০১৯ সালে আমরা ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম। ১৮ এমপি দিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম দলকে। এখন ভোট কমছে, সিট নামছে।” তার মতে, নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে কোনও অতিরিক্ত সাহায্য নয় কর্মীদের কব্জির জোরই সাহায্য করবে।
ভৌগলিকভাবে আজ, সোমবার রাজ্যের দুই প্রান্তে সভা করছেন রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা। উত্তরবঙ্গে উত্তরকন্যা অভিযানে শুভেন্দু অধিকারী। খড়গপুরে নিজের গড়ে আদি বিজেপি নেতাদের নিয়েই শহিদ দিবসের সভা করলেন দিলীপ।
গত লোকসভা নির্বাচনে দিলীপের গড় থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করে বিজেপি। সেই থেকে রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি দিলীপের ‘রাগ’ সর্বজনবিদিত। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়ার পর সেই ফাটল আরও চওড়া হয়। দিলীপকে বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে দেখতে পাওয়া যায়নি। তার মাঝেই ২১ জুলাই “কোনও না কোনও মঞ্চে থাক”, এই মন্তব্যে জল আরও ঘোলা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুর্গাপুরের সভাতেও তিনি থাকেননি। চলে যান দিল্লি। ফিরে এসে ঘোষণা করেন আজকের সভার কথা। সূত্রের খবর, দলীয় অনুমতি না পেয়েও এই সভা করেছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।
দিলীপের রাগ ও গেরুয়া শিবিরের ফাটল যে বড়সড় তা দিলীপের কথাতে কার্যত স্পষ্ট। এদিনের সভা থেকে তিনি বলেন, “২০১৯ সালে আমরা ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম। ১৮ এমপি দিয়েছিলাম। তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম দলকে। এখন সিট কমছে। ভোট নামছে। নিজেদের কব্জির জোরেই আমাদের জিততে হবে।” কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, “কী পারবেন তো? লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত তো?”
দিলীপ বিজেপির পতন নিয়ে সরাসরি কোনও নেতাকে দায়ী না করলেও তাঁর ইঙ্গিত কোন দিকে তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। যদিও এর দায় তিনি ইউটিউবার, সংবাদমাধ্যমের একাংশের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ওটা শুধু মাধ্যম মাত্র। তাঁর আসল লক্ষ্য শুভেন্দু, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারদের দিকেই। কারণ দিলীপ সরে যাওয়ার পর দায়িত্ব নিয়েছিলেন সুকান্তই। যার আমলে সরকার গড়াতো দূর, শক্তি কমেছে বিজেপির। লোকসভা নির্বাচনে কমেছে সিট। এতকিছুর পরেও তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ডাক দিয়েছেন বিজেপির এই ‘আদি’ নেতা দিলীপ ঘোষ।