• ‘জাত’ তুলে আদিবাসী অধ্যাপিকাকে কটূক্তি! প্রতিবাদে পিডি উইমেন্স কলেজে তুমুল বিক্ষোভ
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কলেজের এক আদিবাসী অধ্যাপিকাকে ‘জাত’ তুলে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠল অধ্যক্ষার বিরুদ্ধে। জাতি-বিদ্বেষের পাশাপাশি হেনস্তা করতে ওই অধ্যাপিকাকে সম্প্রতি কলেজের একটি ইস্যুতে শোকজও করা হয় বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে সোমবার কলেজে বিক্ষোভ দেখায় পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতি। রাজেশ লাকরা, প্রধান হেমব্রমের নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা কলেজে এসে এদিন অধ্যক্ষার সঙ্গে দেখা করতে চান। অভিযোগ, সেসময় বহিরাগত কিছু মেয়ে তাঁদের বাধা দেন। এনিয়ে কলেজে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে যদিও অধ্যক্ষা আদিবাসী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন। দীর্ঘক্ষণ ধরে আলোচনা চলে। বৈঠক শেষে অবশ্য কাঁদতে কাঁদতে নিজের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় অধ্যক্ষা সমাপ্তি সাহাকে। একাধিক অধ্যাপিকা জানান, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। 

    কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তপন মিত্র বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যে কারণে  আদিবাসী নেতৃত্ব এদিন কলেজে এসেছিলেন। অধ্যক্ষার সঙ্গে কথা বলার পর তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, যে অভিযোগ তোলা হয়েছে,  আদৌও তা ঠিক নয়। ওই আদিবাসী অধ্যাপিকাকে কোনওভাবেই হেনস্তা করার ঘটনা ঘটেনি। 

    তাঁর দাবি, সম্প্রতি কলেজে ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিমের (এনএসএস) দায়িত্ব নিতে বলা হয় ওই আদিবাসী অধ্যাপিকাকে। তিনি রাজি হচ্ছিলেন না। বিষয়টি অধ্যক্ষা কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে জানান। সেখানে ঠিক হয়, ওই অধ্যাপিকাকে চিঠি দেওয়া হবে। তপন বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি, কয়েকজন অধ্যাপক মিলে কীভাবে গোলমাল পাকিয়ে কলেজে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করা যায়, তার চক্রান্ত করছেন। তাঁরা অধ্যক্ষাকে কলেজ থেকে সরাতে চাইছেন। একারণেই উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এদিন অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি অধ্যক্ষা। পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বলেন, এখন কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই।

    এদিকে, যে সহকারী অধ্যাপিকাকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে, তিনি এদিন কলেজে ছিলেন না। মোবাইল স্যুইচড অফ ছিল। মেসেজ করা হলেও জবাব আসেনি। পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির জলপাইগুড়ি জেলার সহ সভাপতি প্রধান হেমব্রম বলেন, এক আদিবাসী অধ্যাপিকা আমাদের সংগঠনের কাছে অভিযোগ করেন, কলেজের অধ্যক্ষা তাঁকে জাত তুলে কটূক্তি করেছেন। হেনস্তা করা হয়েছে তাঁকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এদিন কলেজে গিয়েছিলাম। কিন্তু অধ্যক্ষা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

    প্রধানের অভিযোগ, কলেজে ঢোকার পর কিছু বহিরাগত মেয়ে আমাদের আটকায়। আমাদের প্রশ্ন, বহিরাগত মেয়েরা কী করে কলেজে ঢুকছে? বহিরাগতদের কলেজে ঢোকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন পিডি উইমেন্স কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিও।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)