বোগ্রাম প্রাইমারি স্কুলে বসছে নেশার আসর, বিরক্ত শিক্ষক-অভিভাবকরা
বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: রাতের নির্জনতার সুযোগে রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া বোগ্রাম প্রাইমারি স্কুল ক্যাম্পাসে বসছে নিত্য নেশার আসর। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক যে, প্রতিদিন স্কুল শুরুর আগে খালি মদের বোতল, গ্লাস, চিপসের প্যাকেট সহ অন্যান্য নেশার সরঞ্জাম পরিষ্কার করতে হয় শিক্ষক, শিক্ষিকা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। নেশাগ্রস্তদের এমনই বাড়বাড়ন্তে কার্যত তিতিবিরক্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে স্থানীয় লোকজন। সোমবার স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়েছে।
১৯৪৫ সালে রায়গঞ্জ শহর ঘেঁষা কমলাবাড়ি এলাকায় বোগ্রাম প্রাইমারি স্কুলটি স্থাপিত হয়। তারপর থেকে সুনামের সঙ্গে স্কুলটি চলছে। বর্তমানে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ১১৩ জন। আবার শুধু বোগ্রাম প্রাইমারি স্কুলই নয়, একই ক্যাম্পাসের মধ্যে রয়েছে উত্তর ছত্রপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সেই কেন্দ্রের বারান্দায় একই উপদ্রব চলে প্রতি রাতে। সেই সঙ্গে জলের কল ভেঙে দেওয়া, নলকূপ চুরি করে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। কয়েক বছর ধরেই পুরো স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যে মাদকাসক্তদের উপদ্রব শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। এব্যাপারে প্রতিবাদ এবং পুলিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়। কয়েকদিন নজরদারির ফলে তাণ্ডব কমে। তারপর আবার যে কে সেই। সম্প্রতি শুরু হওয়া সেই তাণ্ডবেই কার্যত অতিষ্ঠ সকলে।
বোগ্রাম প্রাইমারি স্কুলের টিআইসি সুমন্ত পোদ্দার বলেন, সপ্তাহে ছ’দিন স্কুল হয়। প্রত্যেকদিন আমরা ক্লাস শুরুর আগে নেশার সামগ্রী, মদের বোতল সরাই। তারপর শুরু হয় ক্লাস। এদিনও স্কুলের সদর দরজার সামনে মদের বোতল পড়ে ছিল। সঙ্গে গ্লাস, চিপসের খালি প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যায়। এসবের জন্য স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয়ে চলেছে। পড়ুয়াদের মধ্যেও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। ক্ষুদে পড়ুয়ারা জিজ্ঞেস করে এসব কিসের বোতল? এর উত্তর কী দেব, ভেবে পাই না আমরা। একই সমস্যায় সরব স্কুল চত্বরেই উত্তর ছত্রপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী বাসনা রায় দাস। তাঁর দাবি, প্রতিদিন সকালে কেন্দ্রের দরজা খোলার আগে বারান্দায় পড়ে থাকা মদের বোতল সরাতে হয়। তারপর কেন্দ্রের কাজ শুরু করি। এসব বন্ধ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।(মাঠে পড়ে মদের বোতল। দেখাচ্ছেন শিক্ষক। - নিজস্ব চিত্র।)