সংবাদদাতা, মানিকচক: মানিকচকে একদিনে প্রায় ২৪ সেন্টিমিটার বাড়ল গঙ্গা নদীর জল। গঙ্গার বিপদসীমা (২৪.৬৯ মিটার) থেকে মাত্র ২১ সেন্টিমিটার নীচে রয়েছে জলস্তর। জল বৃদ্ধিতে গোপালপুরের উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলা গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। গ্রামের রাস্তা ভেঙে হুহু করে গঙ্গার জল ঢুকছে গ্রামে। বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছেছে গঙ্গার জল। আতঙ্কে রাত জাগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সেচদপ্তর সূত্রে খবর,আগামী কয়েকদিনে গঙ্গার জলস্তর আরও বৃদ্ধি পাবে। ফলে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে পাড়ের বাসিন্দাদের। বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন গঙ্গা পাড়ের বাসিন্দারা। মালদহ জেলা সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, গঙ্গার জলস্তর অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় গোপালপুরে অসংরক্ষিত এলাকায় জল ঢুকছে। সেখানে একটি ছোট্ট রিং বাঁধের মতো করে জল আটকানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মানিকচক ব্লকের অন্তর্গত গোপালপুরে কয়েকদিন ধরেই চলছে গঙ্গাভাঙন। রবিবার থেকে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে গঙ্গার জলস্তর। উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলা সম্পূর্ণ অসংরক্ষিতভাবে রয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকায়। সেখানে বসবাস করে প্রায় ছ’শো পরিবার। রবিবার গঙ্গার জল অসংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে পড়ে। একটি উঁচু রাস্তার কারণে জল সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু গভীর রাতে প্রবল জলস্রোতে ভেঙে যায় রাস্তাটি। যার ফলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলায়। রাস্তা ভেঙে নদীর জল হু হু করে গ্রামের ভিতরে ঢুকে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা চেষ্টা করেও জলের গতি থামাতে পারেনি। খবর দেওয়া হয় সেচদপ্তরে। দপ্তরের আধিকারিকরা খুব কম পরিমাণ বালির বস্তা আনায় গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কিন্তু মানিকচক থানার পুলিসের হস্তক্ষেপে জরুরী ভিত্তিতে শুরু হয় কাজ। তবে সেই বালির বস্তার মাধ্যমে জলের গতি রোখা সম্ভব হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।
সোমবার সকালে দেখা যায়, উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলা গ্রামের বাড়িগুলির একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছেছে গঙ্গার জল। উত্তর হুকুমতটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় জলমগ্ন। সেখানকার ক্লাস গোপালপুর হাইস্কুলে স্থানান্তর করা হয়েছে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, অসংরক্ষিত এলাকার কয়েকশো বিঘা পাটের জমি জলের তলায়। বাড়ির একেবারে কাছে জল চলে আসায় আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দা সিটু হক বলেন, যে কোনও মুহূর্তে গঙ্গার জল ঘরে ঢুকে যেতে পারে। কয়েকদিন নাকি জলস্তর আরও বাড়বে। জল ঘরে ঢুকে গেলে কোথায় যাব, কোথায় থাকব? আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছে পাড়ের বাসিন্দাদের।
শুখা মরশুমে সেচদপ্তর কাজ না করায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। সিটুর কথায়, আমরা আগে থেকে কাজ করার দাবি জানিয়েছিলাম। শেষ মুহূর্তে কাজ করায় এই পরিণতি।
জেলা সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, আগামী কয়েক দিনে আরও বাড়বে গঙ্গা নদীর জলস্তর। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।