• জল্পেশ থেকে বাণেশ্বর, উত্তরে শিবের মাথায় জল ঢালতে পুণ্যার্থীদের ঢল
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: শ্রাবণের প্রথম সোমবার শিবের মাথায় জল-দুধ ঢালতে মন্দিরে মন্দিরে পুণ্যার্থীর ভিড় আছড়ে পড়ল। স্থানীয়ভাবে বসেছে মেলাও। শৈবতীর্থ ময়নাগুড়ির জল্পেশে শ্রাবণী মেলার প্রথম দিন ১৬ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে, জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সম্পাদক গীরেন্দ্রনাথ দেব। শিলিগুড়ির কাছে বাগডোগরার জংলিবাবা মন্দিরে কয়েক হাজার ভক্ত ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে পুজো দেন। বাগডোগরা বনাঞ্চলের ভিতর রয়েছে শ্রী শ্রী ১০৮ জংলি বাবা মন্দির। হাতি উপদ্রুত এই বনাঞ্চলে যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য নজরদারিতে ছিলেন পুলিস, সেনা এবং বনকর্মীরা। এদিকে, রবিবার ভোররাত থেকেই কোচবিহারের বাণেশ্বর মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালতে ভক্ত সমাগম হয়। বিপুল পুণ্যার্থী আসায় যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড ও পুলিস প্রশাসন বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল। 

    জল্পেশের গর্ভগৃহে প্রবেশের পর যাতে কেউ সেলফি না তোলেন,তা নিয়ে দিনভর প্রচার চালানো হয়। আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত শ্রাবণী মেলা চলবে। জল্পেশের হাতিগেট দিয়ে আসা ভক্তরা স্কাইওয়াক দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। অপরদিকে, মেলার মাঠ হয়ে যাঁরা আসেন, তাঁরা শিব-পার্বতী গেট হয়ে মন্দিরে ঢোকেন। শ্রাবণ মাসজুড়ে জল্পেশ মন্দিরে পুজো দিতে কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়ে থাকে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ও মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে কয়েকশো ভলান্টিয়ার রাখা হয়েছে। বসানো হয়েছে প্রচুর সিসি ক্যামেরা। প্রতিবেশী রাজ্য অসম থেকেও এদিন ভক্তরা আসেন। সারা রাত লাইনে দাঁড়িয়ে সোমবার ভোর থেকে শিবের মাথায় জল ঢালেন ভক্তরা। 

    শিলিগুড়ি থেকে এদিন পুজো দিতে আসেন পাপাই বসাক, সারদা সরকার। তাঁরা বলেন, এবার আলাদা দু’টি গেট করা হয়েছে। টিকিট কাউন্টারও পর্যাপ্ত রয়েছে। এককথায় ভালো ব্যবস্থা। মন্দির কমিটির সম্পাদক বলেন, ৫০ টাকা করে টিকিটের দাম। প্রথম দিন ১৬ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। 

    বাগডোগরার জংলিবাবা মন্দিরে বাগডোগরা ছাড়াও নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, শিলিগুড়ি সহ অনেক দূরের এলাকা থেকে শিবভক্তরা আসেন। মূলত ভারতীয় সেনার তত্ত্বাবধানে এই মন্দিরে পুজো হয়। সেনার পক্ষ থেকে পানীয় জল, প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। জঙ্গলের প্রবেশ মুখ থেকে গোটা এলাকায় মোতায়েন ছিলেন বাগডোগরা রেঞ্জের বনকর্মী, বাগডোগরা থানার পুলিস সহ ট্রাফিক কর্মীরা। দুর্ঘটনা এড়াতে এবছর এশিয়ান হাইওয়ের পাশে দোকান বসতে দেওয়া হয়নি। যাঁরা হেঁটে মন্দির পর্যন্ত যেত পারেননি, তাঁদের জন্য বাগডোগরা ট্রাফিক গার্ড নিঃশুল্ক তিনটি বাস ও অটো পরিষেবা দেয়। পুজো দিতে আসা সুপর্ণা সাহা, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রতি বছরই শ্রাবণ মাসে জংলিবাবা মন্দিরে আসি। এবছরও সপরিবারে এলাম। 

    শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার বাণেশ্বর শিবমন্দিরেও ব্যাপক ভক্ত সমাগম হয়। গোটা মাসজুড়েই প্রতি সোমবার ভক্ত সমাগম হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড জানিয়েছে। জেলার বিভিন্ন শিবমন্দিরেও ছিল ভক্ত সমাগম।
  • Link to this news (বর্তমান)