বজ্রপাতে বিকল ট্রান্সফরমার, বিদ্যুৎহীন ডাইনমারি, হাতির ভয়ে রাত জাগে গ্রাম
বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামের ডাইনমারি গ্ৰাম গত ২০ দিন ধরে নিষ্প্রদীপ। বাজ পড়ে ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি। শুধু যে আলো জ্বলছে না তাই নয়, পাম্প না চলায় মিলছে না পানীয় জলও। এদিকে অন্ধকার গ্রামে রাত হলেই ঢুকে পড়ছে হাতির পাল। সবমিলিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের এই অসহায় পরিস্থিতিতে স্থানীয় পঞ্চায়েত কিংবা ব্লক প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। তাঁরা সুখে নিদ্রা যাচ্ছেন। ট্রান্সফরমার সারানোর কোনও উদ্যোগ প্রশাসনের কোনও বিভাগের তরফে দেখা যায়নি।
ঝাড়গ্রামের বাঁধগড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্ৰাম ডাইনমারি। আদিবাসী ও জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। চাষবাস কিংবা দিনমজুরের কাজ করেই সংসার চলে বাসিন্দাদের। দিনরাত হাতির আতঙ্কে দিন কাটে। আলো না থাকায় অন্ধকার রাতে গাছের ডালপালা ভাঙার শব্দ শুনে গ্ৰামবাসীরার হাতির পালের উপস্থিতি বুঝতে পারছেন। হাতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পালা করে গ্ৰাম পাহারা দিচ্ছেন তাঁরা। মাস দেড়েক আগে হাতির হানায় গ্ৰামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। গ্ৰামবাসীরা সেই আতঙ্ক এখনও ভুলতে পারেননি। গ্ৰামে বিদ্যুৎ না থাকায় সেই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। বিদ্যুতের অভাবে পাম্পেও জলও উঠেছে না। গ্ৰামবাসীরা পাতকুয়োর জলে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন। গ্ৰাম পঞ্চায়েত বিদ্যুৎ না থাকার কথা জানে। তারপরেও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় গ্ৰামবাসীদের ক্ষোভ বাড়ছে। গ্ৰামবাসী জিতেন ভুক্ত বলেন, বাজ পড়ে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার পুড়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। অথচ কেউ ট্রান্সফরমারটি সারানোর উদ্যোগ নিচ্ছে না। গৃহবধূ অনিতা মল্লিক বলেন, অন্ধকারে হাতি কখন ঢুকছে বুঝতে পারছি না। গাছের ডাল ভাঙার শব্দ শুনে হাতি আসার কথা বুঝতে পারছি। কারেন্ট, খাবার জল না থাকায় খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে। রাতে হাতি আসছে কি না দেখার জন্য ঘরবার করতে হচ্ছে। দ্রুত সুরাহা চাইছি। বাঁধগড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কমল দলাই বলেন, বাজ পড়ে ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় গ্ৰামে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। কিন্তু পঞ্চায়েত কেন পদক্ষেপ করেনি প্রশ্ন করায় তিনি নিরুত্তর। ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেবব্রত সাহা বলেন, ট্রান্সফরমার সারানোর ব্যাবস্থা কেন নেওয়া হল না, সেটা দেখা হবে। গ্ৰামটিতে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিক মৌমিত মাঝিকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।-নিজস্ব চিত্র