• যোগ্য লড়াইয়ের মুখ, বক্তা তালিকায় জায়গা পেলেন নানা সম্প্রদায় ও ভিন রাজ্যের নেতৃত্ব
    বর্তমান | ২২ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগের বছরগুলিতে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে যে তৃণমূলকে দেখা গিয়েছিল, এবার তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সোমবার একুশের জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে এই বার্তাটাই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সব সম্প্রদায়, সব ভাষাভাষী এবং সব রাজ্যের মানুষের পাশে আছে তৃণমূল। এরই পাশাপাশি লড়াইয়ের যোগ্য মুখকে সামনে এনে সুসংহত অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে।

    সোমবার একুশে জুলাই তৃণমূলের সভা ছিল ঐক্যবদ্ধ এবং সংগঠিত। জনসমাগমের নিরিখে তৃণমূলের খাতায় সব হিসেব ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন নেতারা। সকাল ১১টাতেই ধর্মতলা প্রাঙ্গণের ছবিটা বলে দিয়েছে, এদিনের জনসমাগমের রেকর্ড সর্বকালীন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, যেহেতু সামনের বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, তাই লড়াইয়ের দিক নির্দেশিকা নিতে গ্রাম থেকে শহরের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা হাজির হয়েছিলেন ধর্মতলার বুকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বক্তব্য রেখেছেন, তখন জনপ্লাবনকে ক্যামেরার লেন্সে ধরাও মুশকিল হচ্ছিল।

    তৃণমূলের এদিনের সভার সভাপতিত্ব করেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাইয়ের ঘটনার কথা তুলে ধরেন তিনি। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন এবং পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি ও দলের ইতিহাস ব্যাখ্যা করেন সুব্রতবাবু। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি। মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত মমতা ঠাকুর বক্তব্য রাখেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে বিজেপি যেভাবে ভুল বুঝিয়ে রাজনীতি করেছে, মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে, তা তুলে ধরেন মমতা ঠাকুর। বাংলা ভাষাভাষীদের উপর যেভাবে আক্রমণ ও হেনস্তা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি। উল্লেখ করেন, আমরা ভারতীয়, এটাই আমাদের প্রমাণ। ডিএনএতে আমরা ভারতীয়।

    আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত প্রতিনিধি তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা এদিন সভায় বক্তব্য রাখেন। আদিবাসী সমাজে অতি পরিচিত মুখ তিনি। মানুষের স্বার্থে লড়াই-সংগ্রাম দীর্ঘদিন ধরে করছেন। বিজেপি শাসিত রাজ্যে আদিবাসীদের উপর যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, সেই কাহিনী তুলে ধরেন তিনি। জানান, এই দেশে সকলের সমান অধিকার। ভাষা, সংস্কৃতির এক অটুট বন্ধন রয়েছে। কিন্তু বিজেপি চাইছে, ভাগাভাগির রাজনীতি করে মানুষকে আলাদা করে দিতে। তার জবাব দিতে আমাদের বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে।

    তৃণমূল এদিনের সভায় যাঁরা বক্তব্য রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন ভিন রাজ্যের বাসিন্দারাও। উত্তরপ্রদেশের ললিতেশপতি ত্রিপাঠি, মেঘালয়ের মুকুল সাংমা, অসমের সুস্মিতা দেব বক্তব্য রাখেন। এই তিনজন পরিচিত মুখ এবং যোগ্য নেতা-নেত্রী হিসেবে সুবিদিত। এদিন তৃণমূল নতুন কোনও মুখকে সামনে আনেনি। কোনও উঠতি নেতা-নেত্রীকে সভায় হাজির করায়নি। হয়নি কোনও যোগদান কর্মসূচি।  দলের বাৎসরিক মেগা সমাবেশের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দলের লড়াই, সংগ্রাম সকলকে জানতে হবে। লড়াইয়ের ফসল তৃণমূল পেয়েছে। কেউ কেউ কেউটে শাপের মতো আচরণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)