খাবার হিসেবে ভারতে বেশ জনপ্রিয় সসেজ। তা তৈরির পদ্ধতিও খুব মজার। ঠেসে ঠেসে ভরা হয় মাংসের পুর। এটি খেতে হয় নরমসরম। তবে গঠনটি বেশ শক্তপোক্ত। এই সসেজ নির্মাণের প্রযুক্তিই ব্যবহার হতে চলেছে সাগর ব্লকে বাঁধরক্ষার কাজে। সসেজ শুধু নয়, বাঁধরক্ষায় কাজে ব্যবহার হচ্ছে সজারুর কাঁটাও।
সসেজের ভিতর যেমন থাকে মাংসের পুর। তেমন পুর তৈরি করা হচ্ছে ইট দিয়ে। টুকরো-আধলা-গোটা ইট ঠেসে ঠেসে ভরা হচ্ছে লোহার খাঁচার আবরণে। সসেজের মতো দেখতে সে খাঁচা রাখা হবে বাঁধের ধারে নদীর পাড়ে। জল এসে ধাক্কা খাবে ইটের সসেজে। বাঁধের গায়ে সরাসরি আছড়ে পড়বে না। ফলে জলের ঢেউয়ে খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বাঁধ। সেচদপ্তর এই কাজে হাত দিয়েছে। এর ফলে মাটি ও বাঁধ দুই-ই রক্ষা করা যাবে বলে দাবি করছেন সেচদপ্তরের আধিকারিকরা। আর তৈরি হচ্ছে বাঁশের পর্কুপাইন খাঁচা। এ দিয়ে মাটির ধস ঠেকানো যাবে।
পর্কুপাইন অর্থাৎ সজারু। তার শরীরে যেমন খোঁচা খোঁচা কাঁটা থাকে। বাঁশ দিয়ে সেরকম কাঁটাওয়ালা খাঁচা তৈরি হবে। নদীর তীরে সেগুলি বসানো হলে ঢেউ প্রতিরোধ হবে। মাটি ধুয়ে যাবে না উল্টে জমতে থাকবে। তাতে ভবিষ্যতে বাঁধের গোড়া হবে আরও মজবুত। সাপখালি এলাকায় বহু বছর ধরে নদী ভাঙন হচ্ছে। নতুন কিছু না করা গেলে আরও ক্ষতি হবে বাঁধের। তাই এই বিশেষ পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে সেচদপ্তরের পক্ষ থেকে। এই দুই পদ্ধতিই বাঁধের উপর সরাসরি জলের আঘাত আটকাতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
সাগর ব্লকের মুড়িগঙ্গা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাপখালি মৌজার চাঁপাতলা গ্রামে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কাজে খরচ এক কোটি ৯৬ লক্ষ ২২ হাজার ২০০ টাকা। বাঁধরক্ষায় সাগরের একেক জায়গায় একেক রকম উদ্যোগ নিয়েছে সেচদপ্তর। বঙ্কিমনগরে কংক্রিটের ঢালু বাঁধ তৈরি করে তার উপর বসানো হয়েছে ইটের স্ল্যাব। আবার গঙ্গাসাগরের সৈকতে টেট্রাপড দিয়ে রক্ষা করা হচ্ছে বাঁধ। কখনও শালবল্লা দিয়েও মাটি ক্ষয় রোধ চলছে। তবে সাপখালি মৌজায় যে প্রযুক্তি নেওয়া হয়েছে তা অভিনব বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রায় ছ’শো মিটার নদীবাঁধজুড়ে বসবে এই কাঠামো। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছর জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সেচদপ্তর।