• সরকারি হাসপাতালে প্রথমবার, পিজিতে শুরু হচ্ছে রোবটিক সার্জারি
    এই সময় | ২২ জুলাই ২০২৫
  • এই সময়: সামান্য কাটাছেঁড়া, ন্যূনতম রক্তপাত ও নিখুঁত অপারেশন। এই কারণে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে রোবটিক সার্জারি। কিন্তু সেই পরিষেবা এখনও পূর্ব ভারতে মূলত বেসরকারি হাসপাতালেই মেলে।

    এবার সেই ফাঁক পূরণ করছে এসএসকেএম। ইতিমধ্যেই সেখানে এসে গিয়েছে সাত কোটি টাকার রোবট। পূর্ব ভারতের প্রথম সরকারি হাসপাতাল হিসেবে হয়তো আগামী মাস থেকেই এসএসকেএমে শুরু হবে রোবটিক সার্জারি।

    হাসপাতাল সূত্রে খবর, নতুন ওপিডি বিল্ডিংয়ে তৈরি হয়েছে যে ওটি, তাতেই থাকছে রোবটিক আর্ম এবং কনসোল প্যানেল। জেনারেল সার্জারি, ইউরোলজি, গায়নেকোলজি বিভাগের রোগীরাই প্রাথমিক ভাবে এই রোবটিক সার্জারির পরিষেবা পাবেন।

    পরে তালিকায় যুক্ত হবে অর্থোপেডিক্স, নিউরোসার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, কার্ডিয়োথোরাসিক ভাস্কুলার সার্জারি ও প্লাস্টিক সার্জারি। এসএসকেএম কর্তারা জানাচ্ছেন, রোবটিক সার্জারি ইউনিট চালুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

    প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনা, নতুন ওটি তৈরি এবং চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণ সবই ইতিমধ্যে শেষ। দিল্লি এইমসে গিয়ে চিকিৎসকরা প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন।

    স্বাস্থ্যভবনের পদস্থ আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, করোনা কালেই এই প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। রোবটিক সার্জারি ইউনিট পরিচালনার জন্য তিনটি বিভাগের দু’ জন করে শিক্ষক–চিকিৎসক, দু’ জন করে ওটি প্রশিক্ষক ও সিনিয়র নার্সের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।

    জুন মাসেই তাঁরা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রোবটিক সার্জারিতে অস্ত্রোপচার অনেক বেশি নির্ভুল হয়। চিকিৎসকের হাত যেখানে সীমিত, রোবটের সাহায্যে জটিল স্থানে সহজেই পৌঁছানো যায়।

    কারণ, রোবটিক আর্ম ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরে। আবার বয়সজনিত কারণে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা যে অপারেশন বন্ধ করে দেন, রোবটিক প্রযুক্তি সেই সীমাবদ্ধতাও দূর করবে।

    সরকারি স্তরে এই পরিষেবা চালু হলে গরিব রোগীরাও উপকৃত হবেন। পাশাপাশি সার্জারি শাখার জুনিয়র ডাক্তারও এই প্রযুক্তিতে সড়গড় হয়ে যেতে পারবেন শুরু থেকেই।

    স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যে অন্তত ২০০–৩০০ জন সরকারি রোবটিক সার্জেন প্রশিক্ষিত হয়ে যেতে পারবেন। এই প্রযুক্তির কল্যাণে যেহেতু অস্ত্রোপচার পরবর্তী নিরাময় অপেক্ষাকৃত দ্রুত হয় প্রথাগত সার্জারির তুলনায়, তাই রোগীর হাসপাতালবাস কম হবে। ফলে অনেক বেশি রোগীর অস্ত্রোপচারও সম্ভব হবে কম সময়ে।

  • Link to this news (এই সময়)