• ফের ফালাকাটার বাসিন্দাকে এনআরসি নোটিস, অসম সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মমতা
    প্রতিদিন | ২৩ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বাংলার বাসিন্দাকে এনআরসির নোটিস পাঠাল অসম সরকার। আর সেই বিষয় নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিনরাজ্যে সম্প্রতি বাংলা ভাষা ও বাঙালি বিরোধিতার ঘটনা ঘটছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলায় কথা ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার মাঝেই চলতি মাসের প্রথমদিকে কোচবিহারের বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসী অসম ফরেন ট্রাইব্যুনাল থেকে এনআরসির নোটিস পেয়েছিলেন। এবার আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাসিন্দা অঞ্জলি শীল একই নোটিস পেলেন। এই খবর কানে পৌঁছতেই প্রতিবাদে ফের গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। অসমের মুখ্যমন্ত্রীকেও এদিন একহাত নিয়েছেন তিনি। 

    আজ, মঙ্গলবার বিকেলে নবান্ন থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার বাইরে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর বিদ্বেষমূলক আচরণ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতিহিংসার প্রতিফলন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বাংলায় কথা বললে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে আসলে কেন্দ্র বাংলায় এনআরসি চালুর চেষ্টা করতে চাইছে বলে অভিযোগ আগেই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

    মঙ্গলবার ফের আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাসিন্দাকে এনআরসি নোটিস পাঠানো নিয়ে প্রতিবাদে সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন বারবার বাংলার মানুষকে বিব্রত করা হবে? বাংলার বিষয়ে কেন অসম সরকার নাম গলাবে? এদিন সেই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার প্রতিও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। অসম, গুরুগ্রামের ডিটেনশন ক্যাম্পে বহু মানুষকে আটকে রাখার অভিযোগও উঠেছে। সেই রাজ্যে বিশৃঙ্খলতা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মমতার খোঁচা, নিজের রাজ্যের দিকে নজর দিক অসমের মুখ্যমন্ত্রী।

    ফালাকাটার জটেশ্বরের বাসিন্দা অঞ্জলি শীলের নামে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনালের নোটিস ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সেই নোটিস সোশাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছে। তাতে আতঙ্কগ্রস্ত ওই পরিবার। অঞ্জলি শীল বলেন, “বাবার বাড়ি অসমে হলেও আমরা বর্তমানে এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গিয়েছি।নোটিস পেয়ে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।” ওই নোটিসের নিচের দিকে ফালাকাটা থানার উল্লেখ রয়েছে। সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া নোটিসটি ২৬ জুন এই ইস্যু করা হয়েছে।আগামী ১৯ আগস্ট অসমের কোকরাঝাড়ে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। কিন্তু নোটিসের উপরে কোচবিহার পুলিশ সুপারের অফিসের সিল রয়েছে। জেলা গরমিলের কারণে এই নোটিস আলিপুরদুয়ারের বদলে কোচবিহার এসপি অফিসে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

    এই ঘটনা নিয়ে প্রবল ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসমীয়া ভাষায় ওই নোটিস লেখা হয়েছে। কেন বিজেপি শাসিত অসম রাজ্য থেকে এভাবে বারবার চিঠি আসবে? কেন বাঙালিদের নিশানা করা হচ্ছে? সেই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকেও নিশানা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, এর আগে অসম সরকারের থেকে কোচবিহারের বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে এনআরসি নোটিস পাঠানো হয়েছিল। গতকাল, সোমবার ২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় শহিদ দিবসের মঞ্চে তাঁকে পাশে নিয়েই এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
  • Link to this news (প্রতিদিন)