গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ দেখতে গেলে গ্রামবাসীরা তাড়া করলেন সেচ দফতরের আধিকারিক থেকে শুরু করে ঠিকাদার সংস্থার লোকজনকে। পাশাপাশি চলে বিক্ষোভ। তাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। তাতে এক সেচ দফতরের কর্মী আহত হন। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের পশ্চিম রতনপুরে। ভাঙন কবলিত এই গ্রামটি অবস্থানগত ভাবে মানিকচকের ভূতনির পাশেই। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা এ দিন ভাঙন প্রতিরোধের কাজে বালির বস্তা ফেলতে বাধা দেন। ভূতনি থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। আজ, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার কথা সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এ দিকে গঙ্গার জল বেড়ে যাওয়ায় রবিবার রাত থেকে প্লাবিত হতে শুরু করেছে মানিকচকের গোপালপুর পঞ্চায়েতের অসংরক্ষিত এলাকা। উত্তর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলা এবং ঈশ্বরটোলা গ্রামে নিচু এলাকায় থাকা জমিজমা প্লাবিত হয়েছে। যে এলাকা দিয়ে জল ঢুকছিল সেখানে রাতেই বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা করে সেচ দফতর। তা সত্ত্বেও এ দিন সকাল থেকেও জল ঢুকছে গ্রামে। এ দিকে, গোপালপুরের দক্ষিণ হুকুমতটোলায় নদী বাঁধের কাছাকাছি। সেখানে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা রয়েছে। জেলার বহু জায়গায় ভাঙন অব্যাহত।
সোমবার মালদহে গঙ্গার জলস্তর আরও বেড়েছে। এ দিন দুপুরে গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৪.৫২ মিটার, যা বিপদসীমার চেয়ে মাত্র ০.১৭ মিটার কম। ভাঙনের তীব্রতাও বেড়েছে। কয়েক দিন ধরেই রতুয়া ১ ব্লকের শ্রীকান্তটোলা এবং পশ্চিম রতনপুরে গঙ্গা ভাঙন চলছে। দুটি জায়গাতেই ভাঙন ঠেকাতে বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। এ দিন সেই কাজ পরিদর্শন ও তদারকিতে পশ্চিম রতনপুর গ্রামে গিয়েছিলেন সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের দু’জন সহকারী বাস্তুকার ও দু’জন জুনিয়র বাস্তুকার। এ ছাড়া ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরাও ছিলেন। অভিযোগ, সে সময় মহিলারা তাঁদের তাড়া করেন। ঢিল ছোড়া হয়। এমনকি ভাঙন প্রতিরোধের জন্য বালির বস্তা ফেলার কাজে বাধা দেওয়া হয়। ভুতনি থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। সেচ ৃআধিকারিক, কর্মীরা সেখান থেকে ফিরে আসেন। গ্রামবাসীরা প্রশ্ন তোলেন, শুখা মরশুমে কাজ না করে এখন বর্ষার সময় কেন কাজ করতে আসা হয়েছে? ভাঙন প্রতিরোধের নামে সামান্য কিছু বস্তা ফেলে টাকা লুট করা হবে বলে তাদের অভিযোগ। সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ দিন পশ্চিম রতনপুরে দফতরের আধিকারিকদের তাড়া করা হয়। ঢিলে এক জন কর্মী জখমও হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বুঝিয়ে সেখানে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা হবে।’’