• শিবদিঘির মোহনদের খোলা খাবার নয়, দিতে হবে প্যাকেটজাত চিংড়ি
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: এবার থেকে বাণেশ্বরের শিবদিঘিতে থাকা মোহনদের নির্দিষ্ট খাবার কিনে দিতে হবে ভক্তদের। মোহনদের জন্য প্যাকেটজাত শুকনো চিংড়ি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। শিবদিঘির অফিস ঘরেই তা মিলছে মাত্র ৫০ টাকায়। আগে ভক্তরা শিবদিঘিতে গেলে ইচ্ছেমতো খাবার মোহনদের জন্য দিতেন। এছাড়াও আলাদা করে মোহনদের খাবার দেওয়া হতো। এতে তাদের খাবারের পরিমাণ ও ভিন্নতা বেড়ে যাচ্ছিল। সেই কারণেই এবার খাদ্যতালিকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। 

    প্রশাসনের দাবি, ভক্তরা অনেক সময় মুড়ি, চানাচুর, ছোলা সহ যার যেমন ইচ্ছে, তেমন খবার নিয়ে এসে পুকুরে ছুড়ে দেন। এতে সমস্যা হয়। সেই কারণেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন শ্রাবণ মাস চলছে। এই মাসের প্রতি রবিবার রাত থেকে সোমবার সারাদিন বাণেশ্বর শিবমন্দিরে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। ভক্তরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে শিবের মাথায় জল দেন। সেই সঙ্গে মন্দিরের পাশে থাকা শিবদিঘিতে মোহনদের দর্শন করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার এখানে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আটটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সোমবার জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা সেখানে গিয়ে পুজো দিয়ে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করেন। নিরাপত্তার জন্য ১৫ জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী রবিবার প্লাস্টিকমুক্ত মন্দিরের লক্ষ্যে প্রচার চালানো হবে। 

    কোচবিহারের মহকুমা শাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগে থেকেই মোহনদের ডাল, ভাত ও শুকনো চিংড়ি দেওয়া হতো। আগে শুধুমাত্র মন্দিরের পক্ষ থেকেই শুকনো চিংড়ি দেওয়া হতো। এখন শুকনো চিংড়ির ছোট ছোট প্যাকেট করা হয়েছে। ভক্তরা চাইলে অফিস ঘর থেকেই তা কিনতে পারবেন। আশপাশের দোকানদারদেরও বলা হয়েছে তাঁরা চাইলে সেই প্যাকেট রাখতে পারেন। ভক্তরা চাইলে সেখান থেকে কিনে মোহনদের দিতে পারবেন।

    কোচবিহারে বাণেশ্বর শিবমন্দিরের মাহাত্ম্যের সঙ্গে মোহনরা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় মানুষরা তাদের অত্যন্ত ভক্তি করেন। করোনা বা তার পরবর্তী সময়েও শিবদিঘিতে পরপর মোহনের মৃত্যু হচ্ছিল। কিছুদিন আগেও এখানে মোহন অসুস্থতার খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার মোহন রক্ষায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় মোহন রক্ষা কমিটিও নানাভাবে এখানে বসবাস করা বহু প্রাচীন মোহনগুলির দিকে নজর রাখে। যাতে কোনওভাবে এরা ক্ষতির মুখে না পড়ে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মোহনদের মৃত্যু হয়। তাই মানুষ যাতে যেমন তেমন খাবার না দিয়ে শুধুমাত্র এক ধরনের খাবারই মোহনদের দেন, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)