• জাপানি এনসেফেলাইটিসের থাবা, শুয়োর নিয়ে হিমশিম জেলা প্রশাসন
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, রাজগঞ্জ: জাপানি এনসেফেলাইটিস (জেই) থাবা বসানোর পর শুয়োর নিয়ে কার্যত হিমশিম অবস্থা জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের। খামার তো আছেই, মূলত চা বাগান এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো শুয়োর মাথাব্যথার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের। তবে, এখনই শুয়োরের খাটাল বন্ধের পথে হাঁটতে চাইছে না প্রশাসন। বরং খাটালগুলি মশারি দিয়ে ঘিরে দিতে বলা হয়েছে। 

    মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সদরের রায়পুর জোড়াবাঁধ এলাকায় একটি খামারে থাকা শুয়োরের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের চিকিৎসকরা। সংগৃহীত রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

    এদিকে, জাপানি এনসেফেলাইটিসের পাশাপাশি ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও স্ক্রাব টাইফাস থাবা বসানোয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি অভিযানে জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে জাপানি এনসেফেলাইটিসের টিকা নেওয়া থেকে কোনও শিশু বাদ পড়ে গিয়েছে কি না, তা খুঁজে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। 

    জেলাশাসক শমা পারভীন বলেন, শুয়োরের খামার থেকে যাতে কোনওভাবে জেই ছড়াতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি খামার মশারি দিয়ে ঘেরার পাশাপাশি নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করতে বলা হয়েছে। 

    জলপাইগুড়ি জেলায় এখনও পর্যন্ত জাপানি এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত পাঁচজনের খোঁজ মিলেছে। যদিও এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। নতুন করে রাজগঞ্জ ব্লকে একজন জেই’তে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর। এদিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার বলেন, রাজগঞ্জে যাঁর কথা বলা হচ্ছে, তিনি অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে আক্রান্ত। তাঁর যে জেই হয়েছে, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। রাজগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাহুল রায় বলেন, এলাকায় শুরু হয়েছে ফগিং, জমা জল পরিষ্কার ও মশা নিধন অভিযান। রাজগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, আক্রান্তের পরিবারের হাতে মেডিসিন যুক্ত মশারি তুলে দেওয়া হয়।

    সিএমওএইচ বলেন, ন’মাসে প্রথম এবং ১৬-২৪ মাসের মধ্যে জেই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়ে থাকে শিশুদের। কোনও শিশু ওই ভ্যাকসিনের আওতা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

    জলপাইগুড়ি সদরের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন আধিকারিক শৌভিক বাড়ুই বলেন, আমার ব্লকে এখনও পর্যন্ত সাতটি শুয়োরের খামারের খোঁজ মিলেছে। এরমধ্যে দু’টি খামারের মালিক সমস্ত শুয়োর বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি খামারগুলিকে বলা হয়েছে, মশারি দিয়ে চারদিক ঘিরে দিতে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)