• বনদপ্তর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে তুলোধনা জাতীয় পরিবেশ কোর্টের
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি ও খোয়াইয়ের পরিবেশ নিয়ে কঠোর অবস্থান নিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। বনদপ্তর ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিষ্ক্রিয়তাকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করে পরিবেশ আদালত সাফ জানিয়েছে, বনাঞ্চলে হোটেল একদিনে তৈরি হয়নি। কতদিন আগে তা তৈরি হয়েছে? বনদপ্তর এতদিন কেন নিষ্ক্রিয় ছিল? কেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? আদালত আরও প্রশ্ন তোলে, সোনাঝুরি জঙ্গলে যে এত দূষণ হয়েছে বা হচ্ছে, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কি চোখ বন্ধ করে ছিল? তারা কি সুভাষ দত্ত কবে মামলা করবেন তার জন‍্য বসেছিল?

    এই প্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালত নির্দেশ দেয়, বনদপ্তর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে হলফনামা সহ কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণী (অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট) জমা দিতে হবে। ঠিকঠাক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মুখ্য সচিবের বক্তব্য তলব করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

    ঘটনা সূত্রপাত পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের সম্প্রতি সোনাঝুরি ও খোয়াই এলাকার পরিদর্শন ঘিরে। পরিবেশের দূষণ ও বেহাল অবস্থা দেখে তিনি চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরেই তিনি পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সোনাঝুরি হাট যেমন একদিনে তৈরি হয়নি, তেমনই দিনের পর দিন প্রশাসনের চোখের সামনে এই হাটের বিস্তার ঘটেছে। পরিবেশের যে খারাপ অবস্থা এবং ভয়াবহ দূষণ আমি দেখেছি, তা আগামী প্রজন্মকে এক প্রাকৃতিক ঐতিহ্য থেকে বঞ্চিত করবে।

    প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনের খোয়াই ও সোনাঝুরি হাট এক সময়ে ছিল শান্ত প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমাহার। বর্তমানে সেখানে পরিকল্পনাহীন বাণিজ্যিক দখল, পাকা নির্মাণ, যানবাহনের চাপ ও শব্দদূষণে সেই পরিবেশ প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। তবে পরিবেশ আদালতের হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁরা মনে করছেন, এখনই প্রশাসন যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেয়, তবে খোয়াই ও সোনাঝুরি ফিরে পেতে পারে তার প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। এমতাবস্থায় বনদপ্তর ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কী পদক্ষেপ নেয় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
  • Link to this news (বর্তমান)