নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: লাগাতার ধরপাকড়ের জেরে রানাঘাট জেলা পুলিসের এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ অনেকটাই কমে গিয়েছে। গত দু’মাসে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তারের সংখ্যা নগণ্যই। পুলিসি অভিযানের চাপে পাশের জেলা থেকে ‘অপারেট’ করা মানবপাচার চক্রের দালালরাও অনেকটাই নিষ্ক্রিয়।
রানাঘাট জেলা পুলিস জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১৬০জন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছিল। সেবছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ২০২৫সালের মে মাসের মাঝামাঝি অবধি অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১২৪। হাঁসখালি, গাংনাপুর, ধানতলা ও কৃষ্ণনগর জেলা পুলিসের অধীন কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকা থেকে এসমস্ত বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছিল। লাগাতার পুলিসি অভিযানে শতাধিক মানবপাচার চক্রের দালালও গ্রেপ্তার হয়। তারা মোটা টাকার বিনিময়ে অনুপ্রবেশকারীদের এদেশে নিয়ে আসা, আশ্রয় দেওয়া এবং ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ জোগাড় করে দিত। এই দালালরা দিনেরবেলায় কেউ টোটোচালক, কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করত। আর রাত হলেই শুরু হতো মানবপাচারের রমরমা ব্যবসা।
তবে এখন পুলিস বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর পেয়ে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। তাতেই দালালচক্রের সক্রিয়তায় যেমন ভাটা পড়েছে, তেমনি অনুপ্রবেশেও রাশ টানা গিয়েছে বলে পুলিসের কর্তারা মনে করছেন। তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত ছয়-সাতজন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছে। সক্রিয় দালালের গ্রেপ্তারির সংখ্যা আরও কম।
হাঁসখালি, ধানতলা ও গাংনাপুরের দালালচক্রের বিরুদ্ধে লাগাতার পুলিসি অভিযানের জেরে উত্তর ২৪ পরগনা ও মুর্শিদাবাদের দালালচক্র সক্রিয় হওয়ায় চেষ্টা করেছিল। জেলার বাইরের এসমস্ত চক্রকেও অনেকটাই নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে রানাঘাট জেলা পুলিস। এবিষয়ে পুলিসের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, আমরা নজরদারি ও অভিযান কমাচ্ছি না। অনুপ্রবেশ এবং মানবপাচার ব্যবসার গ্রাফ যে নীচে নামানো গিয়েছে, তা ধরে রাখাই আমাদের লক্ষ্য। অল্পবিস্তর যে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে, তার খবর পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রতীকী চিত্র