• ফের খড়্গপুর আইআইটিতে ছাত্রের অপমৃত্যু, তোলপাড়
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: কলকাতার মেধাবী ছাত্র ঋতম মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের খড়্গপুর আইআইটিতে পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু! চলতি বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ সাত মাসে  পাঁচ জন মেধাবীর জীবন অকালে চলে যাওয়ায় শোকস্তব্ধ আইআইটি কর্তৃপক্ষ। 

    সোমবার রাতে চন্দ্রদীপ পাওয়ার (১৯) নামে ওই ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। বাড়ি মধ্যপ্রদেশে। চন্দ্রদীপ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, গলায় ওষুধ আটকে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। রাত ১১টা নাগাদ খড়গপুর আইআইটির বি সি রায় হাসপাতালে মারা যান তিনি। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, চন্দ্রদীপের কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। তবে সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার রাতেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। পরে ওষুধ খাওয়ার সময় বিপত্তি ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে। আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চন্দ্রদীপকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি।

    চন্দ্রদীপের বাবা জয়রাম পাওয়ার বলেন, ‘রাতে দু’বার ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। সর্দি-কাশির সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছিলাম। ওর মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।’

    আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন রাত সাড়ে দশটা। চন্দ্রদীপ তখন নেহেরু হলের একটি কক্ষে ছিলেন। কিছু সময় বাদে ওষুধ খান চন্দ্রদীপ। খাওয়ার পরেই চরম শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সহপাঠীরা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি। তাঁরা চন্দ্রদীপকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে রওনা দেন। পথেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন চন্দ্রদীপ। জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। মেডিক্যাল বুলেটিন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জরুরি বিভাগে আনার সময় নাড়ির কোনও স্পন্দন ছিল না। চামড়ার রঙ নীল হয়ে গিয়েছিল। দ্রুত সিপিআর চালু করা হয়। চলে আসেন অতিরিক্ত তিনজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। অনেক চেষ্টার পর চন্দ্রদীপের শ্বাসনালীতে আটকে থাকা ট্যাবলেটের টুকরো বের করা সম্ভব হয়। কিন্তু তাঁর হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনা আর সম্ভব হয়নি। চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত ছাত্রের ময়নাতদন্ত করা হয়। 

    গত শুক্রবার আইআইটি খড়্গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রিতম মণ্ডলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। মাত্র তিন দিনের মধ্যেই ফের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় শোকাচ্ছন্ন আইআইটি ক্যাম্পাস। এ বছর জানুয়ারি মাসে এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পরে এপ্রিল ও মে মাসেও দুই পড়ুয়ার স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে। পরে জুলাই মাসে মৃত্যু হয় রিতমের। যদিও প্রথম চারটি মৃত্যুর ঘটনায় আত্মঘাতী হওয়ার তত্ত্বই উঠে আসছে। একের পর এক ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসায় আইআইটি কর্তৃপক্ষ একাধিক পদক্ষেপ নিতেও শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)