মেরামতি চলাকালীন ধর্মতলার বিলাসবহুল হোটেল থেকে ৩৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী চুরি
বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আবাসিকদের ভিড় নেই। মেরামতির জন্য আপাতত বন্ধ ধর্মতলার এক বিলাসবহুল হোটেল। সেই সুযোগে দফায় দফায় চুরি। একটি বা দু’টি সামগ্রী নয়, আসবাবপত্র থেকে শুরু করে শৌচালয়ের দামি কল, কিছুই বাদ দেয়নি দুষ্কৃতীরা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী গায়েব হয়ে গিয়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। সোমবার চুরি যাওয়া সামগ্রীর খতিয়ান সহ লিখিত অভিযোগ জমা করা হয়েছে নিউ মার্কেট থানায়। লালবাজার সূত্রে খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিস।
গত বছর থেকে ধর্মতলার এই বিলাসবহুল হোটেলের সমস্ত ঘর মেরামতির কাজ চলছে। ১৮ মাসের চুক্তিতে এক ঠিকাদার সংস্থা এই কাজের বরাত পেয়েছে। এই সংস্কার কাজ চলাকালীন সবকটি ঘরের সঙ্গে থাকা শৌচালয়ের দামি শাওয়ার, জলের কল খুলে একটি স্টোররুমে রাখা হয়। পুলিস সূত্রে খবর, প্রতিটি শাওয়ারের কলের দাম ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা। এমন ২২৮টি শাওয়ারের কল চুরি গিয়েছে বলে জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও শৌচালয়ের বহু কল ওই স্টোর রুম থেকে গায়েব। যে জায়গায় হোটেল কর্মীদের খাবার তৈরি হয়, সেখানে আটটি ফ্যান লাগানো ছিল। মেরামতির জন্য সেই সব ফ্যানও খুলে স্টোর রুমে রাখা হয়েছিল। সেগুলিও পাওয়া যাচ্ছে না বলে সূত্রের খবর। একইসঙ্গে আবাসিকদের ঘরে থাকা বিভিন্ন দামি আলো, কাঠের আসবাব উধাও হয়ে গিয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এক দিনে সব জিনিসপত্র গায়েব হয়নি। সময় সুযোগ বুঝে কেউ বা কারা সেগুলি নিয়ে গিয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, চুরির বিষয়টি প্রথম নজরে আসে হোটেলের এক ইঞ্জিনিয়ারের। তিনিই বিষয়টি জানান হোটেল কর্তৃপক্ষকে। এরপরই হোটেলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। কী কী চুরি গিয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরি করে পুলিসকে জমা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে নিউ মার্কেট থানার পুলিস। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না। তবে হোটেলের যাবতীয় জিনিস যে স্টোর রুমে রাখা হয়েছে, তার নিরাপত্তায় ২০ জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। তাঁদের নজর এড়িয়ে কীভাবে এত বিপুল অর্থের সামগ্রী চুরি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই ২০ জন নিরাপত্তারক্ষীর তালিকা চেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি, যে ঠিকা সংস্থা কর্মীদের নিয়োগ করেছিল, সেই সংস্থাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হয়েছে। একইসঙ্গে, কতজন কর্মী কোন শিফটে কাজ করছেন হোটেলে, তাঁদের নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা সহ বিস্তারিত তালিকা তৈরি করছে পুলিস। প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান, সেই কর্মীদের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত বা অভিযুক্তরা। তাঁদের চিহ্নিতকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।