• কমছে গভীরতা, রবীন্দ্র সরোবরে ড্রেজিংয়ের সুপারিশ
    প্রতিদিন | ২৪ জুলাই ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: পলি জমছে রবীন্দ্র সরোবরে। ফলে কমছে জলস্তর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সমীক্ষা রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ২০২২-২০২৫ পর্যন্ত এই বৃহৎ জলাশয় সমীক্ষা করে কেএমডিএকে সম্প্রতি রিপোর্ট জমা দিয়েছে।

    রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন বছর ধরে পলি জমছে। ফি বছরে গড়ে ৮.৩ সেন্টিমিটার করে পলি জমেছে এই জলাশয়ে। স্বাভাবিকভাবেই জলস্তর কমছে। রবীন্দ্র সরোবরের গভীরতা হওয়ার কথা ২০ ফুট বা ৬ মিটার। পলি জমায় গভীরতা কিছুটা হলেও কমছে বলে মনে করা হচ্ছে।

    জাতীয় সরোবরের তকমা পাওয়া রবীন্দ্র সরোবরের আয়তন প্রায় ৭৩ একর। দক্ষিণ কলকাতার এই কৃত্রিম জলাশয়ে শীতের সময় অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে। ২০ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে, অসংখ্য ক্ষুদ্রতর প্রাণী ও শ্যাওলা পাওয়া গিয়েছে। প্রথম দিকে জলাশয়ের চারধারে পলি জমেছে। কিন্তু জলাশয়ের প্রাণী ও গাছগাছালির ক্ষতির আশঙ্কায় সেই সময় ময়লা পরিষ্কার হয়নি। কিন্তু এখন সরোবরের গভীরতা কমতে শুরু করেছে।

    যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদলের অভিমত, সরোবরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে গেলে ‘ইকো ফ্রেন্ডলি ড্রেজিং’ করতে হবে। কেএমডিএ-র এক কর্তার কথায়, “প্রায় শতাব্দীপ্রাচীন এই জলাশয়ের প্রাকৃতিক ও জলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল কোনও উল্ল্যেখযোগ্য গুণগত পরিবর্তন হয়েছে কি না? কিন্তু বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট বলছে জলাশয়ের গভীরতা কমা ছাড়া আর তেমন কোনও বড় পরিবর্তন হয়নি।”

    কেএমডিএ সূত্রে খবর, প্রতিনিয়ত রবীন্দ্র সরোবর পরীক্ষা করা হয়। ইকো ফ্রেন্ডলি ড্রেজিং করার আগে সরোবরের জল ও গাছ ও প্রাণীর অবস্থা আরও ভালো করে সমীক্ষা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সরোবরের জলের পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে না। তাই সবদিক দেখেশুনে কাজ করতে হবে।

    রিপোর্টে বলা হয়েছে সরোবরের উত্তর দিকে বেশি পলি জমছে। গত তিন বছরে ২৮ শতাংশ পলি পড়েছে। পলির জন্য অল্প বৃষ্টিতেই জল উপচে বাইরে পড়ছে। উলটো দিকে বাইরের অপরিস্রুত জলও মেশার সম্ভাবনা রয়েছে। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সরোবরের জৈব বৈচিত্রর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে এখনই আশঙ্কার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছে কেএমডিএ-র বিভাগীয় কর্তারা।

    সমীক্ষার পাশাপাশি জলাশয়ের গভীরতা বাড়ানোর পদ্ধতিও জানানো হয়েছে। কেএমডিএ-র এক কর্তার কথায়, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের গাইডলাইন মেনেই ফাইটো প্লাংক্টন ও জু প্লাংক্টন-সহ জৈব বৈচিত্র রক্ষা করেই জলাশয় সংস্কার করতে হবে। মাছের স্বাভাবিক প্রজনন বর্ষাকাল- এই সময়ে পলি অপসারণ করা যাবে না। ড্রেজিং করার প্রতিটি ধাপে বায়ো ডাইভার্সিটি বোর্ডকে অবহিত করতে হবে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)