বর্ধমান বোমা কাণ্ডে NIA তদন্ত চেয়ে মামলা, নেতাকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার তৃণমূলের
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ জুলাই ২০২৫
পূর্ব বর্ধমানের রাজুয়া গ্রামে বিস্ফোরণ কাণ্ডে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন যুব তৃণমূলের জেলা স্তরের এক নেতা। আর সেই পদক্ষেপেই কার্যত রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। বুধবার সন্ধ্যায় দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ওই তৃণমূল নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করল শাসকদল।
কলকাতা হাইকোর্টে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় যিনি মামলা দায়ের করেছেন তিনি হলেন শুভেন্দু দাস। তিনি পেশায় আইনজীবী এবং যুব তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি রাজুয়া গ্রামের বোমা বিস্ফোরণে এক ব্যক্তির মৃত্যু ও একাধিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় তিনি এনআইএ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবি, এই ঘটনাটি নিছক কোনও ‘লোকাল ক্রাইম’ নয়, বরং এর পিছনে বড় ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। এমনকি বিধায়ক নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর ওপর হামলার ছক কষা হয়েছিল। সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কতটা সুরক্ষিত, তা বড় প্রশ্ন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয় দলীয় অস্বস্তি।
কাটোয়ার বিধায়ক এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, শুভেন্দু দাস যেটা করেছেন তা একেবারেই দলীয় অবস্থানের পরিপন্থী। এরপরেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, তিনি পুলিশের উপর পূর্ণ আস্থা রাখেন। তারা সঠিক পথে তদন্ত চালাচ্ছে। কেন শুভেন্দু এমন মামলা করলেন, তা বোধগম্য নয়।
এদিকে, একই দিনে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই মামলার মূল অভিযুক্ত তুফান চৌধুরীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র, বেশ কিছু গুলি এবং প্রায় দু’কেজি বোমা তৈরির মশলা। তাঁকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই বিস্ফোরণ মামলাকে কেন্দ্র করে জেলার রাজনৈতিক মঞ্চে একদিকে যেমন তদন্তের দাবি উঠেছে কেন্দ্রীয় স্তরে, অন্যদিকে তেমনই স্পষ্ট হয়ে উঠছে দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল কতটা কঠোর হতে পারে।