• ‘বাড়ির মহিলারাও সক্রিয় কর্মী, বেকারত্ব নিয়ে মিথ্যে বলছে কেন্দ্র’, সরব অমিত
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ জুলাই ২০২৫
  • দেশে বেকারত্বের প্রকৃত চিত্র আড়াল করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা ড. অমিত মিত্র। সম্প্রতি সমাজমাধ্যম একটি পোস্টে তিনি সরাসরি দাবি করেছেন, বেকারত্ব সংক্রান্ত কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বিভ্রান্তিকর। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাস্তব অবস্থা লুকোনোর চেষ্টা চলছে।


    অমিত মিত্রের বক্তব্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ মানুষকে বোঝাতে চাইছে যে দেশে বেকারত্বের হার মাত্র ৪ শতাংশ। কিন্তু তাঁর দাবি, এই পরিসংখ্যান আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ভারত সরকার যে তথ্য প্রকাশ করে, তা প্রকৃত বেকারত্বের পরিস্থিতির প্রতিফলন নয়। বরং পরিস্থিতি অনেকটাই বেশি উদ্বেগজনক। তা গোপন করতেই সরকার এইভাবে পরিসংখ্যান সাজিয়ে দিচ্ছে। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, বেকার ও কর্মরত শ্রমিকের সংজ্ঞার মধ্যেই রয়েছে কেন্দ্রের ‘চাতুর্য’। অমিত মিত্র লিখেছেন, একজন ব্যক্তি যদি সপ্তাহে মাত্র এক ঘণ্টা কোনও আর্থিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন তবুও তাঁকে 'কর্মরত' বলে গণ্য করা হচ্ছে। এমনকী, যাঁরা দিনভর শ্রম দেন কিন্তু মজুরি পান না, যেমন পারিবারিক কাজে নিযুক্ত মহিলা বা ক্ষেত্রবিশেষে অনুপযুক্তভাবে নিযুক্ত শ্রমিক তাঁদেরও ‘সক্রিয় কর্মী’ হিসেবে ধরা হয়। ফলে সরকারি খাতায় তাঁরা 'বেকার' নন। আর এই উপায়ে প্রকৃত বেকারদের সংখ্যাকে কমিয়ে দেখানো হচ্ছে।

    ড. মিত্র উল্লেখ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশের বেকারত্বের হার মাত্র ৪.৯ শতাংশ। কিন্তু বেসরকারি অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি-এর তথ্য অনুযায়ী ওই একই সময়ে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৮.০৫ শতাংশ। অর্থাৎ বাস্তব পরিস্থিতি ছিল কেন্দ্রের দাবির প্রায় দ্বিগুণ।

    তিনি আরও জানান, দেশে বর্তমানে বেকার মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি, যা স্পেনের মোট জনসংখ্যার সমান। তাঁর মতে, এই সংখ্যাটি একেবারে চমকে দেওয়ার মতো এবং কোনও সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে এমন উচ্চ বেকারত্ব অস্বীকার করার মতো নয়।

    বিশ্ব শ্রম সংস্থা-র সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে অমিত মিত্র জানিয়েছেন, দেশের মোট বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৮৩ শতাংশই যুবক ও যুবতী। এই বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এ এক ভয়ঙ্কর সামাজিক সংকেত। অথচ সরকার এই বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছে না বরং তা ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি লিখেছেন, মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে কেন্দ্র।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)