জনপ্রতিনিধিদের হাজির হতে হবে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্পে, নির্দেশ নবান্নের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ জুলাই ২০২৫
২ আগস্ট থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে নতুন প্রকল্প ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্প নিয়ে বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জেলাশাসকদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে এই কর্মসূচির রূপরেখা তুলে ধরা হয়। জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই শিবিরগুলিতে সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিরা যেন অবশ্যই উপস্থিত থাকেন।
সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি শিবিরে উপস্থিত থাকবেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সংশ্লিষ্ট সদস্য, সংশ্লিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জেলা পরিষদের সদস্য। জনপ্রতিনিধিরা ছাড়াও ব্লকের বিডিও, জয়েন্ট বিডিও, পঞ্চায়েত ও বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের উপস্থিত থেকে শিবির পরিচালনা করতে হবে।
বৈঠকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতেই এলাকার বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে নির্ধারিত হবে কাজের তালিকা। এই কর্মসূচির সবচেয়ে বড় দিক হল, প্রতিটি বুথ বা এলাকা ধরে শিবির বসানো হবে। একত্রে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে, কোন কোন কাজ সেই এলাকায় আগে করা দরকার। মানুষ নিজেরা ঠিক করবেন, তাঁদের পাড়ায় কী কী দরকার, কোথায় উন্নয়ন দরকার। সরকারি স্তরে আগে থেকে কোনও কাজ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে না।
মানুষের মতামতের উপর ভিত্তি করেই হবে কাজের পরিকল্পনা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে বলে মনে করছে নবান্ন, তেমনই প্রশাসনের কাজের গতি ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে বলেও আশাবাদী রাজ্য সরকার। প্রকল্পে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষকে শিবিরে উপস্থিতির সময় রেজিস্টারে নাম লিখিয়ে রাখতে হবে, যাতে প্রকৃত অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ও তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি এলাকায় যে কাজগুলি বেছে নেওয়া হবে, সেগুলি আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করতে হবে। তবে কোনও কাজের প্রস্তাবের বাজেট যদি ১০ লক্ষ টাকার বেশি হয়, তাহলে তা এই প্রকল্পের আওতায় আসবে না। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে আলাদা ভাবে সেই কাজ বাস্তবায়িত করা হবে।
পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকদের কথায়, ‘এই কর্মসূচির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, বুথভিত্তিক বাসিন্দারাই ঠিক করবেন, তাঁদের এলাকায় কোন কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সরকারি স্তরে আর নির্ধারণ করা হবে না প্রয়োজনীয় প্রকল্প। বরং এলাকাভিত্তিক শিবিরে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন এলাকার মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকেরা।’
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ আরও মজবুত করতে চাইছে। শাসকদলের মতে, জনপ্রতিনিধিদের সরাসরি মাঠে নামিয়ে এবং মানুষের সমস্যার কথা শুনে তার সমাধান করলে মানুষের আস্থা বাড়বে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ভোটেও।