• বাগদায় ‘নিপীড়িত’ হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে বিজেপির সিএএ ক্যাম্প
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ জুলাই ২০২৫
  • একদিকে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি হেনস্থার জেরে তোলপাড় গোটা দেশ। তার মধ্যে বাংলাদেশের নিপীড়িত হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে বাগদায় ক্যাম্প খুলেছে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস তোপ দেগেছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।

    বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও। প্রসেনজিৎ ঘোষ নামে বাগদার এক তৃণমূল নেতা বলেন, বিজেপি যে দ্বিচারিতা করছে, তা বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে। যাঁরা উদ্বাস্তু তাঁদের এনআরসি, সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব কেড়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে পুশব্যাক করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সাংসদ শান্তনু ঠাকুর মতুয়া কার্ড দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এই কার্ড থাকলে নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু মহারাষ্ট্রে দেখা গিয়েছে, এই কার্ড থাকা ৪ জনকে পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এটা আইওয়াশ। মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। সিএএ, এনআরসি-র নামে বিজেপি বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

    জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাগদায় বিজেপির এক স্থানীয় নেতার উদ্যোগে নিপীড়িত হিন্দুদের নাগরিকত্ব প্রদানে নাম নথিভুক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বিজয় বিশ্বাস, সুধীর পাণ্ডে, অমলকৃষ্ণ পাণ্ডের মতো ২০১৪ সালের আগে বাংলাদেশ থেকে এপারে এসে বসবাস বসবাস করা হিন্দুরা। তাঁদের কেউ ২০১১ সালে এসেছেন, কেউ ২০০৩ সালে এসেছেন। আবার কেউ ১৯৮৬ সাল থেকে ভারতে এসে বসবাস করছেন, কিন্তু এখনও নাগরিকত্ব পাননি। তাঁরা সকলেই সিএএ ফর্ম ফিলাপ করতে এসেছেন।

    ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের ফরিদপুর থেকে আসা অমলকৃষ্ণ পাণ্ডে জানান, তিনি ১৯৮৬ সালে এপারে এসেছেন। তাঁর ভোটার কার্ড, আধার কার্ডও আছে। তাঁকে বলা হয়েছে, ভোটার ও আধার কার্ড থাকলেই হবে না। তাই তিনি সিএএ অনলাইন আবেদন করতে এসেছেন। আবার ঢাকায় বাড়ি ছিল বিজয় বিশ্বাসের। তিনি ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। এবার নাগরিকত্বের জন্য বাগদার এই সিএএ ক্যাম্পে আবেদন করতে এসেছেন। একইভাবে বাগদার সাগরপুরের বাসিন্দা সুধীর পাণ্ডে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন। তাঁর ভোটার কার্ডও আধার কার্ড নেই। সেজন্য তিনিও এই ক্যাম্পে এসেছেন সিএএ ফর্ম ফিলাপ করতে।

    প্রসঙ্গত, মোদী সরকার ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফায় কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হয়। নতুন পাশ হওয়া সেই আইনে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়। কেবলমাত্র যাঁরা নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর আগে এই সময়সীমার মধ্যে অন্তত এক বছর এবং তার আগে ১৪ বছরের মধ্যে অন্তত পাঁচ বছর ভারতে থেকেছেন, তাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। তবে এই আইনে ব্যতিক্রম রয়েছে অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে। তাদের ক্ষেত্রে ওই আইনে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)