• মুর্শিদাবাদে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ জুলাই ২০২৫
  • মুর্শিদাবাদে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠল। মৃতের নাম ষষ্ঠী ঘোষ (৫৫)। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ভরতপুর থানা এলাকার সুনিয়া গ্রামে। তৃণমূল কর্মীকে হত্যার ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের (পুলিশ জেলা) এসপি কুমার সানি রাজ জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

    বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন ভরতপুরের আলু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সেলাই গ্রামের বাসিন্দা ষষ্ঠী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তায় কয়েক জনের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। বচসা চলাকালীন দু’টি বাইকে থাকা জনা পাঁচেক দুষ্কৃতী অতর্কিতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ষষ্ঠীর উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এলোপাথাড়ি কোপে গুরুতর জখম হন ওই তৃণমূলকর্মী। তাঁর চিৎকারে স্থানীয়েরা ছুটে যান। তার আগেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    পুলিশ জানিয়েছে, ষষ্ঠীর নামে থানায় পুরনো বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। নিয়মিত তিনি ভরতপুর থানায় হাজিরাও দিতেন। ডাকাতি, খুন, অস্ত্র আইনেও ষষ্ঠীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ষষ্ঠীর পরিবারের দাবি, ষষ্ঠী ঘোষকে টার্গেট করে এর আগেও একাধিকবার হামলার চেষ্টা হয়েছিল। তিন-চারবার তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। মৃতের জামাই ভীমদেব পাল বলেন, ‘এর আগেও ষষ্ঠী ঘোষকে কয়েকবার খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল।’

    মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কাউকে রেয়াত করা হবে না।’ ঘটনার তদন্তে নেমে রাত থেকেই তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে এলাকার সমস্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব না কি ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে খুন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তৃণমূল কর্মীকে হত্যার ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করা হয়েছে ষষ্ঠীকে। ষষ্ঠীর স্ত্রী শ্যামলী ঘোষ বলেন, ‘বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ষষ্ঠী। রাত হয়ে গেলেও ফেরেনি। বারবার ফোন করা হলে ফোনও ধরেননি।’ এর পরেই গ্রামের লোকজন মারফত শ্যামলী জানতে পারেন, ষষ্ঠীকে খুন করা হয়েছে। শ্যামলীর দাবি, তাঁর স্বামীর কারও সঙ্গে কোনও বিবাদ ছিল না। চাষাবাদ করতেন। ছেলে, বৌমা, নাতনি নিয়ে তাঁদের সংসার।

    ভরতপুর-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নজরুল ইসলাম টারজানের দাবি, তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক হলেই সবক্ষেত্রে রাজনীতির রং লাগানো হয়, এমনটা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘এই খুনের সঙ্গে রাজনীতি জড়িত নয়। জমি সংক্রান্ত বিবাদ ও পুরোনো শত্রুতার জেরে এই খুন বলে আমরা জানতে পেরেছি। পুলিশের কাছে আমরা দাবি করেছি, প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)