সংবাদদাতা, বাগডোগরা: বাবার মৃতদেহ আগলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে রইল কিশোর। থানা ও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েও ফিরে আসতে হল খালি হাতে। এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল বাগডোগরা।
বৃহস্পতিবার বাগডোগরায় এশিয়ান হাইওয়ের উড়ালপুলের নিচে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতের নাম শিবা মুন্ডা (৫৫)। বাগডোগরারই বাসিন্দা তিনি। মৃত্যুর কিছুক্ষণ পর তাঁর কিশোর পুত্র ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। তবে বাবার মৃতদেহ নিয়ে কী করবে, কোথায় যাবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না সে।
স্থানীয়রা প্রথমে বাগডোগরা থানার দ্বারস্থ হলে সেখান থেকে তাঁদের আপার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে সেখান থেকে পুনরায় থানায় যেতে বলায় দিশাহীন হয়ে বাবার মৃতদেহের কাছে ফিরে আসে ওই কিশোর। এরপরই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানেই বসে থাকে। বিষয়টি নজরে আসতেই কয়েকজন ব্যবসায়ী, সমাজসেবী ও রাজনৈতিক নেতা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা ফের থানায় যোগাযোগ করলে অবশেষে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাগডোগরা থানার পুলিস। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়।
বাগডোগরার বাসিন্দা অলোক পাল বলেন, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে বাবার মৃতদেহ আগলে ছেলেটি বসেছিল। থানায় ও পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েও কাজ হয়নি। অমানবিক এই ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। বিজেপির যুব মোর্চার বাগডোগরার সভাপতি শান্তনু মহন্ত জানান, এটা খুবই অমানবিক ও লজ্জাজনক ঘটনা। ওই ব্যক্তির মৃত্যু কীভাবে হল কেউ জানেন না। পুলিসের যথাসময়ে আসা উচিত ছিল। আমরা এসে পুলিসকে বলার পর অবশেষে তারা এসে দেহ নিয়ে গিয়েছে। কিশোর জানিয়েছে, তার মা আগেই মারা গিয়েছে। বাবা কী করে মারা গেলেন জানে না।
আপার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব সিনহা বলেন, দুঃখজনক ঘটনা। সেই সময় আমি অফিসে ছিলাম না। কে বা কারা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দেয়নি বা আমাকে জানাননি তদন্ত করে দেখব। বাগডোগরা থানার ওসি পার্থসারথি দাস বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছি। ওই কিশোর প্রথমে থানায় এসে কার সঙ্গে কথা বলেছে জানা নেই। তবে আমি খবর পেয়েই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।