নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ইস্টার্ন বাইপাসের লোকনাথ মন্দিরের কাছে লুট হওয়া এটিএমের ঘটনায় তদন্তে নেমে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিস। ইতিমধ্যেই ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছে পুলিসের টিম। গাড়ি চুরির পাশাপাশি এই লুট কাণ্ডের আগে একটি বাইকও চুরি করেছিল দুষ্কৃতী দলের সদস্যরা। যদিও পরবর্তীতে বাইকটিকে ফুলবাড়ির ব্যাটালিয়ন মোড়ে ফেলে রেখে গাড়িতে চেপে এটিএমের দিকে যায় তারা। সেখানে লুটপাট করে অলিগলি ধরে ভক্তিনগর থানার সামনে দিয়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরেছিল দলটি। পরে মাটিগাড়ার হিমাঞ্চল বিহারে গাড়িটি ফেলে রেখে হেঁটেই পালায় দুষ্কৃতী দলের সদস্যরা।
অন্যদিকে, চুরি যাওয়া গাড়ির মালিক সুমিত শূর দাবি করেছিলেন তিনি গত জুন মাসে অসুস্থতার কারণে দু’জন ড্রাইভারকে তাঁর ভাড়ার গাড়িটি চালাতে দিয়েছিলেন। অম্বিকানগরের বাসিন্দা ওই দুই চালককে ডেকে দফায় দফায় ইতিমধ্যেই জেরা করেছে পুলিস। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের এই ঘটনায় কোনও যোগসূত্র খুঁজে পাননি তদন্তকারী অফিসাররা। তবুও ওই দু’জনের উপর নজর রাখা হচ্ছে। এমনকী তাদের ফোন কল রেকর্ডসও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা সবদিক খতিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। একাধিক বিষয়কে নজরে রাখা হচ্ছে। আশা করছি, দুষ্কৃতীর দ্রুত জালে উঠবে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমাঞ্চল বিহারের যেসব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে সেখানে চারজনকে গাড়ি থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। তাদের চেহারা এবং পোশাক দেখে ভিনরাজ্যের নাগরিক বলে মনে হচ্ছে। হাতে ব্যাগও ছিল। সেখান থেকে তারা কোনও পথে শহরের বাইরে গিয়েছে, নাকি শহরেই কোথাও ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের একটি বিশেষ দল ভিনরাজ্যে পৌঁছেছে। ওই রাজ্যের একটি বিশেষ এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও আরও দু’টি দলকে একাধিক এলাকায় বাড়তি নজরদারি রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘটনাতে কোনও গ্রেপ্তারির খবর না থাকলেও খুব শীঘ্রই মূল অভিযুক্তদের ধরা সম্ভব হবে বলে দাবি পুলিসের। তদন্তকারী অফিসারদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্যাসকাটার দিয়ে এটিএম কাটার সময় একাধিক ট্রেতে আগুন লেগে গিয়েছিল। এর ফলে প্রচুর টাকা পুড়ে যায়। এই লুটের পর ভাগ বাটোয়ারা নিয়েও এদের মধ্যে ঝামেলার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও অনুমান করছে পুলিস। সেই সূত্র ধরেও দুষ্কৃতীদের আরও দ্রুত ধরা যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।