গরমে পুড়ছে উত্তরবঙ্গ, দু’টি স্কুলে অসুস্থ ছাত্রছাত্রীরা, ছুটি ঘোষণার দাবি মন্ত্রীকে
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, কুমারগ্রাম: মেঘ জমেছে। মাঝেমধ্যে বিদ্যুতের ঝলকানি। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। বরং উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতল-সর্বত্র কার্যত তীব্র দাবদাহে জ্বলছে। এর জেরে চরম সমস্যায় পড়েছে স্কুল পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার তুফানগঞ্জ ও শিলিগুড়িতে দু’টি স্কুলের ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের হাজিরাও কমেছে। এই অবস্থায় স্কুলে ছুটি ঘোষণা করার দাবিতে এদিনই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি পাঠিয়েছেন কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজকুমার ওরাওঁ। শুধু তাই নয়, গরমে ক্ষতির মুখে ধান খেত ও চা বাগান। সেচের জলের অভাবে অধিকাংশ জায়গায় ধান খেত ফেটে চৌচির। চা গাছের পাতা পুড়ে গিয়েছে।
এদিন দুপুরে শিলিগুড়ির আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টি হয়নি। গত দু’দিনের তুলনায় এদিন শহরে গরমের দাপট ছিল অস্বাভাবিক। দুপুরে শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলে অষ্টম এবং তুফানগঞ্জ বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির দুই পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। তুফানগঞ্জ বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মণিদীপা মণ্ডল বলেন, গরমের জেরে ওই ছাত্রের নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। এনিয়ে পর পর দু’দিন স্কুলে অসুস্থ হল দুই ছাত্র। শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অত্যুহা বাগচি অবশ্য বলেন, স্কুলে অসুস্থ হওয়ার পর ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্নায়ুর সমস্যা থাকায় সে অসুস্থ হয়েছিল বলে পরিবারের লোকরা জানিয়েছেন। তবে, অস্বাভাবিক গরম রয়েছে।
এদিন শিলিগুড়ির বেশকিছু প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীর হাজিরা কম ছিল। এই অবস্থায় স্কুলে ছুটি ঘোষণা করার দাবি তুলেছেন বিজেপির কুমারগ্রামের বিধায়ক। তিনি বলেন, গরমের জেরে স্কুলে পড়ুয়াদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে। আবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। তাই স্কুলে ছুটি ঘোষণা করার দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। শিলিগুড়ির প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায় অবশ্য বলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। এমন আবহাওয়া নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, তীব্র দাবদাহের জেরে হাঁসফাঁস করছে গোটা উত্তরবঙ্গ। এদিন দুপুরে শিলিগুড়ি সহ প্রতিটি শহরের রাস্তা ছিল শুনশান। জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা রাস্তায় বের হন তাঁদের হাতে গ্লাভস, চোখে রোদ চশমা, মাথায় ছিল টুপি। অনেকের সঙ্গে ছিল ছাতা। গলদঘর্ম হয়েছেন সবাই। যার জেরে ডাব ও ঠান্ডা পানীয়ের দোকানে ছিল ক্রেতাদের ভিড়। পাহাড়ের অনেক জায়গায় হোটেল, অফিসে চালাতে হয়েছে ফ্যান। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দার্জিলিং পাহাড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪, কালিম্পংয়ে ২৭, শিলিগুড়িতে ৩৬, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।