ভুল চিকিৎসায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, তদন্তের আশ্বাস
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ভুল চিকিৎসায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে নান্টু দে সরকার নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড । এনিয়ে বুধবার রাত থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পায়ে ব্যথার চিকিৎসা করাতে এসে হেঁটে হাসপাতালের ওয়ার্ডে গেলেও কিছুক্ষণের মধ্যে সেই রোগীর কীভাবে মৃত্যু হতে পারে, এই প্রশ্ন তুলে ঘটনার রাতে মেডিক্যালে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিজনরা। ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। এনিয়ে উপযুক্ত তদন্তের দাবিতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা এবং মেডিক্যালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবিতে জলপাইগুড়ি শহরের মাসকলাইবাড়ি এলাকায় রাস্তায় দেহ রেখে শুরু হয় অবরোধ। খবর পেয়ে পুলিস এলে তাদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা। বিক্ষোভের জেরে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রোডে যানজট হয়। পরে পুলিস সাতদিনের মধ্যে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ ওঠে।
জলপাইগুড়ি শহরের পবিত্রনগর কলোনির বাসিন্দা ৫২ বছরের নির্মাণ শ্রমিক নান্টু দে সরকারের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তিনটি দাবিতে এদিন সকাল থেকে সরব হন মৃতের পরিজনরা। তাঁরা দাবি করেন, শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মর্গে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহের ময়নাতদন্ত করাতে হবে। ময়নাতদন্তের সময় ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা রাখতে হবে। মৃতের পরিজনদের দাবি মেনে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এদিন ময়নাতদন্ত হয়। ভিডিওগ্রাফিও হয়েছে। তবে শিলিগুড়িতে নয়, পোস্টমর্টেম হয়েছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের মর্গে।
এদিন মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, ওই রোগীকে খুবই খারাপ অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। রোগীর পায়ে ব্যথা থাকায় ফ্লুইড চালিয়ে তাঁকে ব্যথার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রোগীর পরিবারের অভিযোগ পেয়েছি আমরা। হাসপাতালের তরফে যদি কোথাও কোনও গাফিলতি হয়ে থাকে, নিশ্চয়ই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মৃতের ছেলে নদাই দে সরকারের অভিযোগ, বুধবার রাত আটটা নাগাদ জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে বাবাকে নিয়ে যাই। তিনি হেঁটে হাসপাতালে ঢোকেন। বাবাকে মেডিসিনের পরিবর্তে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করাতে বলা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর একটা ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর থেকেই বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসককে ডাকার প্রায় ৪৫ মিনিট পর তিনি আসেন। রোগীকে দেখে ডাক্তারবাবু মন্তব্য করেন, এই রোগীকে তো মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করার কথা। সার্জারিতে নিয়ে আসা হল কেন? যদিও রোগীকে কেন মেডিসিন ওয়ার্ডের পরিবর্তে সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মেডিক্যালের সুপার।