পাঁচ-সাত বছর আগেও জলঙ্গিতে মিলত পদ্মার ইলিশ, এখন শুধুই স্মৃতি
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, তেহট্ট: পাঁচ-সাত বছর আগেও তেহট্টের জলঙ্গিতে মিলত প্রমাণ সাইজের ইলিশ। কিন্তু সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। স্থানীয় বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, জলঙ্গি নদীর উৎপত্তি পদ্মা থেকে। পদ্মার সঙ্গে যোগ থাকায় নদীতে মিলত বিভিন্ন ধরনের মাছ। বর্ষায় জলঙ্গিতে পাওয়া যেত জলের রুপোলি শস্য। সেই ইলিশ আসত পদ্মা থেকে। ইলিশ ডিম পারতে মিষ্টি জলে আসে। ডিম পেড়ে আবার তারা নোনা জলে ফিরে যায়। পদ্মা থেকে ইলিশ জলঙ্গি নদীতে এসে মায়াপুরের কাছে গঙ্গায় চলে যেত। সেই সময়ে অনেক ইলিশ নদীতে পাওয়া যেত। ইলিশ ধরার জন্য এলাকার মৎস্যজীবীরা নির্দিষ্ট ধরনের জাল তৈরি করত। গ্রামীণ ভাষায় তার নাম জার জাল বা ইলিশ ধরার জাল। সেই জাল নিয়ে সারারাত ধরে চলত ইলিশ শিকার। এখন সেই জাল ঘরেই তোলা থাকে। মৎস্যজীবী বিকাশ হালদার বলেন, পাঁচ-সাত বছর আগে ইলিশ ধরার জাল আগে থেকেই করে রাখতাম। কারণ আমরা জানতাম এই সময়ে পদ্মার ইলিশ আমাদের নদীতে আসবেই। তাই সেই সময়ে প্রায় তিন-চার হাজার টাকা খরচ করে এই জাল তৈরি করাতাম। সারারাত নদীতে পাঁচ থেকে ছ’টা, কোনও কোনও দিন তার থেকেও বেশি ইলিশ মাছ পেতাম। প্রায় মাস দুয়েক আমরা নদীতে ইলিশ পেতাম। পাঁচ-সাত বছর আগে থেকে আর ইলিশ আসে না। আমাদের সেই জাল এখন ঘরে তোলা থাকে। আরেক মৎস্যজীবী মিঠুন হালদার বলেন, আগে পদ্মার সঙ্গে এই নদীর যোগাযোগ ছিল। ফলে বর্ষায় প্রচুর ইলিশ মাছ নদীতে আসত। এখন এই নদীর সঙ্গে পদ্মার সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় আর ইলিশ মাছ আসে না। আর এবার তো নদীতে জল নেই, তাই ইলিশ মাছ তো দুরের কথা অন্য মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি আবার পদ্মার সঙ্গে নদীর সরাসরি যোগাযোগ হয় তবে হয়তো ফের ইলিশ পাওয়া যেতে পারে। না হলে পুরনো স্মৃতি আঁকড়েই থাকতে হবে।