সংবাদদাতা, তেহট্ট: পরকীয়ার টানে নিজের দু’ বছরের কন্যাকে খুন করল মিনা বিবি নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক মহিলা। জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিস মিনা বিবি ও তার প্রেমিক রাহুল শেখকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার সন্ধ্যায় পলাশীপাড়া থানার ধাওয়াপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পুলিস ধৃতদের বৃহস্পতিবার তেহট্ট মহকুমা আদালতে তুললে বিচারক ছ’ দিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন।
পুলিস ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল শেখের বাড়ি ধাওয়াপাড়া গ্রামে। সে কাজের সুত্রে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি এলাকায় গেলে সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় মিনা বিবির। বিবাহিতা মিনার দু’ বছরের একটি কন্যা সন্তান ছিল। তার নাম লামিয়া খাতুন। পরিচয় থেকে প্রেম হয়ে যায় রাহুল ও মিনার। দু’ বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগে মিনা ধাওয়াপাড়ায় চলে আসে। বুধবার সন্ধ্যার দিকে রাহুল ও মিনা প্রতিবেশীদের জানায় যে, ডায়ারিয়া হয়ে লামিয়া মারা গিয়েছে। এই খবর পৌঁছয় রাহুলের আগের পক্ষের শ্বশুরবাড়িতে। আগের স্ত্রীর ভাই লালন শেখ বিষয়টি থানায় জানায়। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সেখান থেকে শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে রাহুল ও মিনাকে থানায় নিয়ে আসে। প্রতিবেশীদের কাছে পুলিস জানতে পারে, সকাল থেকে মেয়েটি খেলা করছিল। ডায়ারিয়া হলে তারা মেয়েটিকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা তা করেনি। এই কথা শুনে পুলিসের সন্দেহ হয়। তারা শিশুর মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন, এই শিশুর মৃত্যু ডায়ারিয়াতে হয়নি। রাতে লালন শেখ ওই দুজনের নামে থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে মিনা ভেঙে পড়ে স্বীকার করে যে, মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। সে পুলিসকে আরও জানায়, স্বামীর ঘর ছেড়ে রাহুলের কাছে এসেছে সংসার করার জন্য। রাহুল তাকে বলে যে, আমরা দুজন বাইরে কাজে চলে যাব। সেখানে দুজন সংসার পাতব। কিন্তু মেয়েকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। মেয়েকে সরিয়ে দিতে পারলে তবেই যাব। এদিকে স্বামীর ঘরে ফেরার আর উপায় ছিল না মিনার। রাহুলের সঙ্গে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে সে এই কাজ করেছে। ঘটনা ঘটার পর যাতে তাদের কেউ সন্দেহ না করে তার জন্য ডায়ারিয়ার গল্প ফেঁদেছিল।
প্রতিবেশীরা জানান, রাহুলের তিনটে বিয়ে হয়েছিল। কারও সঙ্গে তার সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। নিজেদের স্বার্থের জন্য যারা একটা শিশুকে খুন করতে পারে, তাদের কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি হওয়া উচিত।