সুপ্রিম কোর্টে নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা: তৃণমূল নেতা-কর্মীদের জামিন বাতিলের আবেদন খারিজ হল
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মী খুনে দু’বছর কারাবাস কাটিয়ে জামিন পেয়েছিলেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাঁদের জামিন বাতিলের আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। চিল্লগ্রামে নিহত বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির স্ত্রী কল্পনা মহাপাত্র মাইতি এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য শেখ সাহাবুদ্দিন, মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শেখ হাবিবুল সহ মোট ১৩ জন সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়েন। প্রায় দু’বছর জেল খাটার পর তাঁরা জামিন পান। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাইরে থাকার শর্তে তাদের জামিন দিয়েছিল হাইকোর্ট। পরবর্তীতে সেই শর্তও উঠে যায়। এই মুহূর্তে তাঁরা সকলেই নিজের বাড়িতে আছেন। এই অবস্থায় ১৩ জনের জামিন বাতিলের আর্জি নিয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবার। গত ১৭ জুলাই জামিন বাতিলের ওই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
ওই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই ১৩ জন ইতিমধ্যে দু’বছর কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। প্রায় ৭০ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া বাকি রয়েছে। এখনও মামলার চার্জ গঠন হয়নি। তাই নতুন করে এনিয়ে আদালত কোনও আদেশ দেবে না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশেরই পরই খুশি ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নেতা-কর্মীদের আবারও জেলে ঢোকানোর জন্য বিজেপি সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছিল। কিন্তু, আদালতের নির্দেশে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ মে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের চিল্লগ্রামের বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি হামলার শিকার হন। তৃণমূলের লোকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ১৩ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলকাতার একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর ভাইপো সুশান্ত মাইতি নন্দীগ্রাম থানায় এফআইআর করেন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পবরর্তী হিংসার মামলা সিবিআই হাতে নেওয়ার পর ওই বছরের ৩০ আগস্ট তারা তদন্ত শুরু করে। ওই মামলায় মোট ৪০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিবিআই। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে ডাকা হয়েছিল। প্রথমে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর আরও ১১ জনকে হলদিয়ায় সিবিআই ক্যাম্প অফিসে ডেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই কেসে শেখ সুপিয়ান, দলের নেতা আবু তাহের সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা অভিযুক্ত।
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে কোনওরকম যোগ না থাকা বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। প্রত্যেকেই জামিনে মুক্ত আছেন।
তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ করার জন্য বিজেপির উদ্যোগে নিহতের পরিবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। কিন্তু, সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।