• বিধায়ক বনাম কাউন্সিলার অনুগামীদের ঝামেলা, সামলাতে লাঠিচার্জ পুলিসের
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গভীর রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত উত্তর কলকাতার সিঁথি এলাকা। দলের বিধায়ক অনুগামীদের মারধরের অভিযোগ দলেরই কাউন্সিলার এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। পাল্টা কাউন্সিলরের বাড়ি ঘেরাও বিধায়ক অনুগামীদের। যার জেরে বুধবার গভীর রাতে রীতিমতো বেগতিক পরিস্থিতি হয় দমদম রোডে। বিক্ষোভ সামলাতে পুলিস লাঠিচার্জ করে। পুলিসের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এবং কাউন্সিলার ও তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার পালটা সিঁথি থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিধায়ক অনুগামীরা। 

    জানা গিয়েছে, একদিকে রয়েছে কাশিপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক অতীন ঘোষ গোষ্ঠী এবং অন্যদিকে অভিযোগের তির শান্তনু সেন ও তাঁর স্ত্রী দু নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার কাকলি সেনের বিরুদ্ধে। বুধবার গভীর রাতে তাঁদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান অতীন ঘোষ ঘনিষ্ঠ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। সেখানে মহিলারাও ছিলেন। থানায় অভিযোগ জানান শান্তনু সেন। যার ভিত্তিতে সেখানে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে বিতর্ক তৈরি করে পুলিস, তেমনটাই দাবি স্থানীয়দের।

    জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত কয়েকদিন আগেই। ২ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু তৃণমূল কর্মী একুশে জুলাই বিধায়ক অতীন ঘোষের মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন। অভিযোগ, এই ঘটনার জেরে বুধবার রাতে সাড়ে ৬ নম্বর দমদম রোডে স্থানীয় বিধায়ক অতীন ঘোষের ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে মারধর করা হয়। আঙুল ওঠে স্থানীয় কাউন্সিলার কাকলি সেন এবং তাঁর স্বামী শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে। হামলা, মারধরের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, এক বৃদ্ধাকে চড়ও মারেন কাউন্সিলার কাকলি সেন। ঝামেলা উচ্চগ্রামে ওঠার আগেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। এরপরেই কাউন্সিলারের বাড়ি ঘেরাও করে বিধায়ক অতীন ঘোষের অনুগামীরা। যাঁদের মারধর করা হয়েছিল, তাঁদের পরিবারের লোকেরা সহ পাড়ার অন্যান্য মানুষজন শান্তনু সেনের বাড়ির সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিস বাহিনী। পুলিস লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। অবশেষে বিধায়কের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর কাউন্সিলারের বাড়ির সামনে থেকে বিক্ষোভ সরে যায়। পরিস্থিতি সেই মুহূর্তে সামলানো গেলেও এলাকায় উত্তেজনা ছিল বৃহস্পতিবার দিনভর।

    যদিও, স্থানীয় সূত্রের খবর ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না কাউন্সিলার কাকলি সেন ও তাঁর স্বামী শান্তনু সেন। তাঁরা সেই সময় সিঁথি থানায় উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বিধায়ক অতীন ঘোষের অনুগামী সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সিঁথি থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন কাউন্সিলার কাকলি সেন। সাংবাদিকদের শান্তনু সেন বলেন, যা বলার, লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছি। এদিকে, পুলিস কেন কাকলি সেন, শান্তনু সেন এবং যারা মহিলাদের মারধর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, তার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঁথি থানায় ধর্না-বিক্ষোভ করেন অতীন ঘোষের অনুগামীরা। দমদম ফুলবাগান থেকে ৬ নম্বর দমদম রোড পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিল হয়। দমদম রোডে এসে এদিন সন্ধ্যায় এলাকায় শান্তির বাতাবরণ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন বিধায়ক অতীন ঘোষ। ঘটনায় শান্তনু সেন সহ চারজনের বিরুদ্ধে জোর করে আটকে রাখা, মারধর, ভয় দেখানো সহ  একাধিক ধারায় সিঁথি থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)