ভাষা সন্ত্রাস নিয়ে মহানায়ক সম্মান মঞ্চে সরব মুখ্যমন্ত্রী
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ জুলাই ২০২৫
মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠান থেকেও ভাষা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর প্রতিবাদে সর্বস্তরে কর্মসূচি নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। তাঁর আর্জি, বাংলা ছবি ও শিল্পীদের অবহেলা করবেন না, তাঁদের গুরুত্ব দিন। টলিউডে যাতে আরও বেশি করে বাংলা গান ব্যবহার করা হয় সেই পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। পাশাপাশি সিরিয়ালগুলির বিষয়বস্তু নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, সব ভাষার সিনেমা দেখুন। কিন্তু বাংলা সিনেমাকে অবহেলা করবেন না।
এদিন বাংলা চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য মহানায়ক শ্রেষ্ঠ সম্মান পেয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। পাশাপাশি মহানায়ক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় মেকআপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডু। প্রোডাকশন ডিজাইনারের কাজের জন্য মহানায়ক সম্মান পেয়েছেন শ্রী আনন্দ আঢ্য। বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য গার্গী রায়চৌধুরীকে মহানায়ক সম্মান প্রদান করা হয়েছে। কণ্ঠশিল্পী ইমন চক্রবর্তী, রূপঙ্কর বাগচীকেও এই সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।
এদিনের মঞ্চ থেকে ফের একবার ভাষা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মমতা বলেছেন, ‘বাংলা ভাষার উপরে আজ সন্ত্রাস চলছে। বাংলা ভাষায় যাঁরা কথা বলেন, তাঁদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। বাংলাকে জাগ্রত করতে আর একটা ভাষা আন্দোলনের প্রয়োজন রয়েছে। বাংলা ভাষা গোটা পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে এবং এশিয়াতে দ্বিতীয় স্থানে। প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বাংলা ভাষা কথা বলেন।’ পাশাপাশি মমতা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলা ভাষায় কথা বললে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়টা তিনি কিছুতেই মানতে পারছেন না। এই নিয়ে সর্বস্তরে কর্মসূচি নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন মমতা।
টলিউডে বাংলা গানের ব্যবহার বাড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বাংলা সিরিয়ালের বিষয়বস্তু নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। ঝগড়া, হানাহানি, আত্মহননের বদলে হাসি–খুশি–মজা সম্মলিত সামাজিক গল্প তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। মহানায়ক উত্তমকুমারের সঙ্গে কখনও দেখা করতে না পারায় আফসোস প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভবানীপুরে আগে অনেক সিনেমা হল ছিল। মায়ের সঙ্গে সেখানে সিনেমা দেখতে যেতেন মমতা। তখনকার সিনেমার গানগুলি খুব ভালো ছিল। স্বর্ণযুগের বাংলা গানের বাজার কোনওদিন ফুরোবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘প্রসেনজিৎ একটা ভালো মডেল করেছে। অফিসাররা দেখে এসে আমাকে বলেছে। প্রায় ১০০টি জায়গায় ৪০-৫০ জনের বসার মতো একটা সিনেমাঘর বানানো হচ্ছে। ওই হলটা দেখে আমরা খুশি হয়েছি।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রসেনজিতের উদ্যোগের কারণে বাংলা সিনেমা আরও বেশি ছড়িয়ে পড়বে। বুথ স্তর, তৃণমূল স্তর ও প্রত্যন্ত এলাকায় আরও বেশি করে মানুষ সিনেমা দেখতে পাবেন। পাশাপাশি টলিউডের ছবিগুলি মার্কেটও পাবে। এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।