ধৃতদের নাম বিন্দেশ্বরি সাউ ও মোহন গুপ্তা। কালাজাদু করতে তান্ত্রিকরা এই সি ফ্যান ব্যবহার করে থাকে বলে জানা গিয়েছে। যার বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকার বেশি। বড়বাজার চত্বরে রয়েছে বহু পুরনো ওই দোকান। সামনে থেকে দেখলে মনে হবে জরিবুটির দোকান।স্বাভাবিকভাবে কারও সন্দেহ হয়নি। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন শাখার কাছে বিশেষ সূত্রে খবর আসে ওই জরিবুটির দোকানের আড়ালে বন্যপ্রাণীদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচারে কাজ চলছে। সেখানে হানা দেওয়া ঠিক হবে না বুঝতে পারেন আধিকারীকরা। খবর দেওয়া হয় রাজ্য বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন সেলকে।
ঠিক হাতেনাতে ধরতে হবে। সূত্রের খবর, প্রথমে ক্রেতা সেজে আগে দোকানে যান দুই আধিকারিক। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম করে আসে। বলা হয়েছিল পরের দিন দোকানে এসে সেগুলি নিয়ে যাবে। বিক্রেতাদের যাতে সন্দেহ না হয় সেজন্য কিছু অগ্রিম টাকাও দিয়ে আসেন আধিকারিকরা। নির্ধারিত সময়ে বুধবার বিকেলে দোকানে হাজির হন আবার ওই দুই আধিকারিকরা। দলের বাকি সদস্যরা বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। বিক্রেতা সেগুলি নিয়ে ক্রেতার হাতে তুলে দিতে যাবেন সেই সময়ই পাকড়াও করা হয়। বাজেয়াপ্ত সামগ্রির মধ্যে রয়েছে গোসাপের ৬০টি পুরুষাঙ্গ, বন শুয়োরের দাঁত ১০টি, ২৫০টি সি ফ্যান।
গোসাপ বিলুপ্তপ্রায়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে সিডিউল-১ অন্তর্ভুক্ত। সি ফ্যান প্রবালগোত্রের প্রাণী। সামুদ্রিক এই প্রাণীও সিডিউল-১ অন্তর্ভুক্ত। তন্ত্রসাধনার কাজে এগুলি ব্যবহার করা হয়। বনদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, সি ফ্যান তান্ত্রিকদের কাছে ইন্দ্রজাল নামে পরিচিত। এগুলি কালাজাদু টোনা করতে ব্যবহার করে থাকেন তান্ত্রিকরা। খালি চোখে দেখে মনে হবে এগুলি কোনও গাছের ডালপালা। বিক্রেতারা জরিবুটির সঙ্গে সি ফ্যানগুলি মিশিয়ে রাখত। এই চক্রের পিছনে আসলে আন্তর্জাতিক চক্র রয়েছে মনে করা হচ্ছে। এগুলি কোথা থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে? কারা তাদের সরবরাহ করছে ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা করছে বনদপ্তর।