কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনের মামলায় নারকেলডাঙা থানার ওসি-সহ ৪ জনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই পুলিশ কর্মীদের জামিন মামলায় আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। ওই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি ঘোষ।
শুক্রবার জামিন মামলার শুনানি শুরু হলে সিনিয়র আইনজীবী তখনও আদালতে না আসায় সিবিআই-এর পক্ষ থেকে বিচারপতির কাছে 'শর্ট পাস ওভার' (শুনানি কিছুক্ষণ পরে শুরু করার আর্জি) চাওয়া হয়। তাতে আপত্তি জানিয়ে জামিনের আবেদনকারীর আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সওয়াল শুরু করতে বলা হয়। তখনই আদালত জানিয়ে দেয়, যে হেতু তিনি সোমবার থেকে ১৫ দিন সার্কিট বেঞ্চে থাকবেন, তাই পরের অংশ ১৫ দিন পরে শুনবেন। মামলা অন্য এজলাসে শুনানির সুযোগও দেন বিচারপতি। কিন্তু সবপক্ষ বিচারপতি ঘোষের আদালতেই মামলার শুনানির আর্জি জানায়।
কল্যাণের সওয়ালের পরে সিবিআইয়ের জুনিয়র আইনজীবী বলতে শুরু করেন। একসময় বিচারপতি বলেন, ‘এই মামলা আজই শেষ করে রায় দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এর মধ্যে অনেক আইনি দিক আছে।’ এর পরেই কল্যাণ জোরাজুরি করেন শুক্রবারেই রায় দেওয়ার জন্য।
বিচারপতি ঘোষ দ্রুত অর্ডার দিতে অস্বীকার করেন। কল্যাণ তখন অন্য এক বিচারপতির উদাহরণ তুলে ধরেন। সেই বিচারপতির নাম উল্লেখ করে কল্যাণ বলেন, ‘আমাদের জজেদের কৃপা পেতে হয়। এটাই দুর্ভাগ্য।’ কল্যাণের এরকম মন্তব্য শুনেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। বিচারপতি বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে আদালত সম্পর্কে নানা মন্তব্য করছেন। যা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আপনার লেকচার এই কোর্ট হজম করবে না। আমি এই মামলা ছেড়ে দিচ্ছি। অন্য কোনও বেঞ্চে যান।’ বিচারপতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত ধমক দিয়ে এই মামলা রিলিজ় করে দেন।
উল্লেখ্য, কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনের মামলায় তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সিবিআই ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিল। বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিনই খুন হয়েছিলেন কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা, বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য অভিজিৎ সরকার। এই মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম রয়েছে তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল-সহ একাধিক প্রভাবশালীরও।