• ক্রিকেট খেলতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বাঁশে এফোঁড়-ওফোঁড় কিশোর পেট! প্রাণ ফেরাল জলপাইগুড়ির হাসপাতাল
    প্রতিদিন | ২৫ জুলাই ২০২৫
  • শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: খেলার সময় বাঁশ দিয়ে তৈরি উইকেট কিশোরের পেট এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছিল। ‘মরণাপন্ন’ ওই কিশোরকে নিয়ে পরিবার ও স্থানীয়রা ছুটে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির সরকারি হাসপাতালে। সেখানেই অসাধ্যসাধন। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ওই কিশোরের প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকরা। ছেলের প্রাণ ফিরে পাওয়ায় খুশি পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন সকলেই।

    জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির পেটকাটি এলাকার বাসিন্দা কিশোর অমিত সাহা। ক্রিকেট খেলার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে বাঁশ কেটে উইকেট বানানো হয়েছিল। খেলা চলাকালীন ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ফিল্ডিং করছিল ওই কিশোর। বল ধরতে গিয়ে উইকেটের উপর সরাসরি পড়ে গিয়েছিল। তিন ফুটের ওই বাঁশ কার্যত ওই কিশোরের পেট এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ঘটনা দেখে খেলার সঙ্গীরা আতঙ্কিত হয়ে যায়। খবর দেওয়া হয় পরিবার ও আশপাশের বাসিন্দাদের। কিশোরের পেটের এফোঁড় ওফোঁড় করে বাঁশ বেরিয়ে আছে। ঘটনা দেখে সকলেই আঁতকে উঠেছিলেন।

    কালবিলম্ব না করে ওই কিশোরকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এদিকে ঘটনার পর বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার শরীর থেকে রক্তক্ষরণও হয়ে গিয়েছিল। ফলে ক্রমশ ওই জখম কিশোর ঝিমিয়ে পড়ছিল। দ্রুত শারীরিক পরীক্ষা করা হয় ওই কিশোরের। দেখা যায় পেটের প্রায় সাড়ে তিন ইঞ্চি গভীর গর্ত করে ওই বাঁশের অংশ ঢুকে গিয়েছে। রক্তক্ষরণে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অনেকটাই নেমেছে। রক্তচাপ ক্রমশ কমছে। এদিকে পালস রেট অনেকটাই বেশি। খুব একটা বেশি দেরি করা যাবে না। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে জীবন সংশয় হতে পারে। এদিকে ওই অস্ত্রোপচারও অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। পরীক্ষা করে আরও দেখা যায়, কিডনি, লিভার ছুঁয়ে গিয়েছিল ওই বাঁশ। দেখা যায়, ওই কিশোরের ব্লাড গ্রুপ ও নেগেটিভ। এই গ্রুপের রক্তও সচরাচর পাওয়া যায় না।

    এই অবস্থায় দ্রুত শুরু হয় অস্ত্রোপচার। রক্ত জোগাড় করা হয় হাসপাতাল থেকেই। কিশোরকে বাঁচাতে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা। কয়েক ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর শরীর থেক ওই বাঁশ আলাদা করা হয়। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে, সেই কথা জানান চিকিৎসকরা। কার্যত প্রাণ ফিরে পায় ওই কিশোর। হাঁফ ছাড়েন ওই কিশোরের পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসকদের জন্যই ছেলে প্রাণ ফিরে পেল। এমনই জানিয়েছেন ওই কিশোরের পরিবারের সদস্যরা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)