• বাংলায় কথা বলার জের, মালদার যুবককে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’, উদ্বিগ্ন পরিবার
    এই সময় | ২৫ জুলাই ২০২৫
  • বাংলাদেশি সন্দেহে মালদার যুবককে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল BSF ও রাজস্থান পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। যুবকের নাম আমির শেখ। বয়স ২১ বছর। খবর পাওয়ার পর থেকেই উদ্বেগে দিন কাটছে আমিরের বাড়ির লোকজনের। বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে স্থানীয় প্রশাসন।

    পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, আমির মালদা জেলার কালিয়াচক থানার জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা। কাজের সন্ধানে প্রায় তিন মাস আগে রাজস্থানে পাড়ি দিয়েছিলেন। অভিযোগ, বাংলায় কথা বলায় তাঁকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার করে রাজস্থান পুলিশ। আমিরের আরও অভিযোগ, তিনি আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সব কিছুই দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। তাঁকে মঙ্গলবার রাতে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

    এর পরে শুক্রবার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরছিলেন আমির। সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন কাঁদতে কাঁদতে আমির বলেন, ‘রাজস্থান পুলিশ আমাকে ধরে ২ মাস জেলে রেখেছিল। পরশু রাতে আমাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এখানে আমার কেউ নেই।’ একই সঙ্গে তাঁর আবেদন, ‘আমি ভারতীয়। আমাকে ঘরে ফিরিয়ে নিন।’ সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় (সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন)।

    এই ভিডিয়ো দেখার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে আমিরের পরিবারের। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। আমিরের মা-এর কান্না থামছে না কিছুতেই। কাকা আসাদুল শেখ বলছেন, ‘ভারতের বৈধ পরিচয়পত্রও যদি নাগরিকত্বের প্রমাণ না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়!’

    মালদার যুবককে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার খবর পেয়েছেন জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়াও। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’ আমিরকে অবিলম্বে ভারতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন জালালপুরে ISF-এর অঞ্চল সভাপতি হাসিম আবদুল হালিম। তাঁর কথায়, ‘এলাকার একটা ছেলেকে এ ভাবে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। এ জিনিস মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে আমিরকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

    তবে এবারই প্রথম নয়। গত জুনে বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছিল বাগদার এক পরিযায়ী শ্রমিক দম্পতিকেও। স্ত্রীকে নিয়ে মহারাষ্ট্রের নয়ানগর থানা এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন ফজল মণ্ডল এবং তাঁর স্ত্রী তসলিমা। প্রথমে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পুশব্যাক করা হয় বাংলাদেশে।

    বাংলায় কথা বললেই যে ভাবে বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের বাংলাদেশে সীমান্ত পার করে পুশব্যাক করা হচ্ছে তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

  • Link to this news (এই সময়)