‘আপাতত বিশ্রাম’, ১৫ বছর পর বেলপাহাড়ির গ্রামের বাড়ি ফিরে উচ্ছ্বসিত মাও নেত্রী শোভা
প্রতিদিন | ২৬ জুলাই ২০২৫
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: সংশোধনাগার থেকে বাড়ি ফিরে খোসমেজাজে রয়েছেন প্রাক্তন মাওবাদী নেত্রী শোভা মুণ্ডা ওরফে চন্দনা সিং। আপাতত বাড়িতে কিছুদিন বিশ্রাম নেবেন তিনি। আগামী দিনে কী করবেন? সেই সিদ্ধান্তও নেবেন বলে জানিয়েছেন। মেয়ে বাড়ি ফেরায় বেলপাহাড়ির মাজুগোড়া গ্রামের ওই বাড়িতে এখন আনন্দের মুহূর্ত। বাড়িতে একটি পোষ্য টিয়াপাখি আছে। এদিন সেটির সঙ্গেও কিছু সময় কাটান শোভা। শুক্রবার বাড়িতে খাসির মাংসও রান্না হয়েছিল।
একসময় সশস্ত্র বিপ্লবের পথে হেঁটেছিলেন শোভা মুণ্ডা ওরফে চন্দনা সিং। দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে হয়েছিলেন মাওনেত্রী। ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শোভা। এছাড়াও একাধিক অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর স্বামীও একই আন্দোলনের পথে থেকে গ্রেপ্তার হন। তিনি এখনও জেলবন্দি। দীর্ঘ ১৫ বছর পর গতকাল, বৃহস্পতিবার জেল থেকে মুক্তি পান শোভা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ির ভূমিজ সম্প্রদায়ের মাজুগোড়া গ্রামের দাদার বাড়িতে এসে আপাতত উঠেছেন তিনি। দাদা, বউদি, তাঁদের দুই সন্তানদের সঙ্গে মেতে থাকেন তিনি। সকাল থেকেই মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে ওই এলাকায়। বারান্দাতেই খাটিয়া পেতে বসেছেন তিনি অন্যান্যদের সঙ্গে। গ্রামের অন্যান্যরাও দেখা করেছেন তাঁর সঙ্গে। দেড় দশক পর বাড়ি ফিরে স্বস্তি পেয়েছেন তিনি। পরে গ্রাম ঘুরে দেখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। ছোটবেলা এই গ্রামেই কেটেছিল তাঁর। এদিন শোভা বলেন, “কিছু তো বদল হয়েছে। এই তো এলাম। বৃষ্টিতে বের হতে পারিনি। গ্রাম ঘুরে দেখা হয়নি এখনও।” তাঁর মা মানসিক ভাবে স্থিতিশীল নন। বছর চার পাঁচ আগে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই খানিকটা উদভ্রান্তের মতো মায়ের আচরণ বলে জানা গিয়েছে। শোভার মা লক্ষ্মী দেবী নিজের বাপেরবাড়িতে আছেন। মেয়ের বাড়ি ফেরার কথা মাকে জানানো হয়েছে। তাঁকে ওই বাড়ি নিয়ে আসা হবে বলে খবর।
এদিন শোভা বলেন, “১৫ বছর পর জেল থেকে ফিরেছি। এখন কিছুদিন বাড়িতে রেস্ট নিতে চাই। স্বামী এখনও জেল আছেন। রাজনীতি, চাষবাস, চাকরি-এখনও কিছু ভেবে উঠতে পারিনি। আগামী দিনে ভাবব।” দাদা তারক সিং বলেন, “বোন এত বছর পর বাড়ি ফিরে এসেছে। আমাদের সবার খুব ভালো লাগছে। ও চাইছে আমাদের এই গ্রামের বাড়িতে আমাদের সবার সঙ্গে বেশ কিছুদিন থাকবেন। আমাদের সবার খুব ভালো লাগবে ওর সঙ্গে সময় কাটাতে।”