সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণের মতো নারী বিরোধী ঘটনা রুখতে কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি দিতে নয়া বিল এনেছিল বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। সেই ‘অপরাজিতা বিল’ অনুযায়ী, শিশু-নারীদের ধর্ষণ, ধর্ষণের পর খুন ? এসব গুরুতর ঘটনায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। বিল আগেই বিধানসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। তা অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির দরবারে পাঠানো হয়েছিল। দীর্ঘ সময় পরও বিলটি সই না করে উলটে ‘অতি কঠোর’ অ্যাখ্যা দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে বলে সূত্রের খবর। আর সেটাই এই মুহূর্তে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কি নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ রুখতে যেখানে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সর্বোচ্চ সাজার পক্ষে, সেখানে কেন্দ্রের মনোভাব কি নমনীয়?
রাজভবন সূত্রে খবর, ধর্ষণ-খুনের মতো গুরুতর অপরাধে ‘অপরাজিতা বিলে’ যে ফাঁসির সাজার বিধান রয়েছে, তা ‘অতিরিক্ত নিষ্ঠুর’। সূত্রের আরও খবর, বিলটির বেশ কিছু ধারা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিচ্ছে না বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র। তাছাড়া তার কিছু বিষয় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। সম্ভবত সেসব কারণে বিলে অনুমোদন দেওয়া হল না। আর এতেই প্রশ্ন, নারীসুরক্ষা নিয়ে যে সর্বোচ্চ কঠিন মনোভাব নিয়ে বিল এনেছেন বাংলার নারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরপক্ষ তা শিথিল করতে চাইছে কেন? তবে কি নারীর প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোরতম সাজা দেওয়ার পক্ষে নন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান? এই ঘটনার পর প্রতিবাদে মুখর রাজ্যের শাসকদল।
গত আগস্টে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের পর রাজ্যের নারী সুরক্ষায় আরও জোর দিতে কঠোরতম আইন প্রণয়নের কথা ভেবেছে রাজ্য সরকার। বিশেষত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাবনামতোই কাজ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরেই বিধানসভায় পাশ হয় ‘অপরাজিতা বিল’। তাতে ধর্ষণের মতো অপরাধে দোষীর সর্বোচ্চ ফাঁসির সাজা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিল পাশের পর অনুমোদনের জন্য রাজভবনে পাঠানো হয়। রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলেই তা আইনে পরিণত হয়ে কার্যকর করা যেত। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে তা হয়নি। কঠোরতম সাজা কার্যকরের পথ বন্ধ করে বিলটি ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার সরকার যতটা নারী সুরক্ষায় সচেষ্টা, বিজেপি ঠিক তার উলটো। বিজেপি দোষীদের কঠোরতম চায় না। এবার বিজেপির মুখোশ খুলে যাচ্ছে।”