• IIT খড়্গপুরের পড়ুয়াদের ব্যর্থতার মধ্যেও লড়াই করার সাহস জোগাতে ‘সেতু’ অ্যাপ
    এই সময় | ২৬ জুলাই ২০২৫
  • চলতি বছরে আইআইটি খড়্গপুরে পাঁচ জন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, এর মধ্যে চার জনই মানসিক অবসাদের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের জীবনের মূল্য বোঝাতে শুক্রবার আইআইটি খড়্গপুরে ‘ইন্ডাকশন প্রোগ্রাম’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খড়্গপুরের মহকুমাশাসক পাটিল যোগেশ অশোক রাও। সেখানে তিনি নিজের জীবনের কথা তুলে ধরে পড়ুয়াদের উদ্দেশে জানান, ব্যর্থতা এলে থেমে গেলে চলবে না। নতুন করে শুরু করতে হবে। এই প্রথম ‘ইন্ডাকশন প্রোগ্রাম’ অনুষ্ঠানে অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন। আইআইটি খড়্গপুরের পড়ুয়াদের কথা ভেবে শুক্রবার উদ্বোধন হলো নতুন ‘সেতু’ (SETU) অ্যাপের।

    মহারাষ্ট্রের নান্দেড় (Nanded) জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রাম থেকে পুনের বিখ্যাত কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি.টেক পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন অশোক রাও। তিনি ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন। ২০১৮ সালে পরীক্ষা দিয়ে ২৩১ র‍্যাঙ্ক করে তিনি IPS হওয়ার সুযোগ পান। ২০১৯ সালে ফের পরীক্ষায় বসে ৬৩ র‍্যাঙ্ক করে IAS হন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে তিনি খড়্গপুরের মহকুমাশাসক (SDO) পদে রয়েছেন। এ দিন তিনি পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘জীবনের গতিপথ যে কোনও মুহূর্তে বদলে যেতে পারে। তাই কোথাও থেমে থাকলে চলবে না। ব্যর্থতা এলে নতুন করে লড়াই শুরু করতে হবে। তাতেই খুলবে নতুন পথ।’

    এর পরে তিনি জনপ্রিয় খেলোয়াড় মহেন্দ্র সিং ধোনির কথা টেনে বলেন, ‘তোমরা যে খড়্গপুর শহরে এসেছ। মহেন্দ্র সিং ধোনি এক সময়ে সেই খড়্গপুর রেল স্টেশনের টিটিই ছিলেন। সেখান থেকেই ক্রিকেটে ভারত অধিনায়ক। তার পরে একের পর এক সাফল্য।’ নবীন পড়ুয়াদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমিও যখন গ্রাম থেকে পুনের বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পা রাখি, সবার আগে খোঁজখবর নিই এখানে কোথায় কী ভালো খাবার পাওয়া যায়। প্রথম বছর পুনেতে গণেশ পুজোতেও প্রচুর আনন্দ করেছি। আর এসব করতে গিয়ে প্রথম বছর আমার সিজিপিএ স্কোর হয় ৭.৬। তার পরে নতুন ভাবে শুরু করি। নিজের পছন্দের বিষয়গুলো খুব যত্ন নিয়ে পড়ি। শেষ পর্যন্ত সিজিপিএ স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৯.৫-র কাছাকাছি। এর পরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার থেকে আজ আইএএস অফিসার।’

    এ দিন ‘সেতু’ (SETU) অ্যাপ উদ্বোধন করেন আইআইটি খড়্গপুরের নবনিযুক্ত ডিরেক্টর প্রফেসর সুমন চক্রবর্তী। তিনি জানান, এই অ্যাপের মাধ্যমে পড়ুয়ারা আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাস এবং নিজেদের ডিপার্টমেন্টের সমস্ত তথ্য জানতে পারবেন। মন খারাপ হলে কাউন্সিলরের ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সাহায্য নিতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘মাত্র তিন সপ্তাহের চেষ্টাতেই বিশ্বের বিখ্যাত সব ডেভেলপারদের সাহায্যে আমরা এই অ্যাপ তৈরি করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে দেশের যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অমূল্য সম্পদ হতে পারে এই সেতু অ্যাপ। আসলে এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তির সঙ্গে হৃদয়ের সেতু বন্ধন করতে চেয়েছি।’

  • Link to this news (এই সময়)