• পিতৃপুরুষের গ্রামে দুর্গামন্দিরের উদ্বোধনে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী, তৎপরতা প্রশাসনে
    বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাটের চাকাইপুরে নবনির্মিত দুর্গামন্দিরের উদ্বোধনে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, এই চাকাইপুরেই মুখ্যমন্ত্রীর পৈতৃক ভিটে। চাকাইপুরে মমতার আসার সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। শুক্রবার রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে, বিডিও, পঞ্চায়েত প্রধান ও তৃণমূল নেতৃত্ব গ্রামে এসে মন্দির পরিদর্শন করেন। পঞ্চায়েতকে রাস্তার সংস্কার, দু’ ধারের ঝোপঝাড়, নিকাশি নালা পরিষ্কারের নির্দেশ দেন। মহকুমা শাসক বলেন, এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারেন ধরে নিয়ে সব প্রস্তুতি সেরে রাখছি। আবার ভার্চুয়াল উদ্বোধনও করতে পারেন।

    এদিকে রামপুরহাটেরই কুসুম্বা গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামার বাড়ি। ভাগনির সঙ্গে দেখা হওয়ার আশায় দিন গুনছেন তাঁর মামা নব্বই ছুঁইছুঁই অনিল মুখোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মামার বাড়িতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই চাকাইপুরের বাসিন্দারা তাঁদের গ্রামে যাওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছিলেন। তখন না গেলেও পরের বার যাবেন বলে গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনিলবাবু বলেন, ছোটবেলায় বহুবার সে কুসুম্বা গ্রামের এই বাড়িতেই এসে থেকেছে। সেই ছোট্ট ভাগনি এখন রাজ্যের শাসন ক্ষমতায়। বিরোধীরা তাঁকে যখন নানা ভাষায় আক্রমণ করে তখন খুব খারাপ লাগে। তিনি বলেন, আমার ইচ্ছে ভাগনির সঙ্গে দেখা করার। কিন্তু শারীরিক ক্ষমতা নেই যে বোলপুরে গিয়ে দেখা করব। তবে চাকাইপুর এলে কুসুম্বা অবশ্যই আসবে ভাগনি। অনিলবাবুর আশা, ভাগনি একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসবে। সেটাই দেখে যেতে চান। অনিলবাবুর পুত্রবধূ পম্পাদেবী বলেন, ২০২৩ সালে যখন দিদি বোলপুরে এসেছিলেন, তখন শ্বশুর মশাইয়ের (অনিলবাবু) সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানান। সেই মতো শ্বশুর মশাইকে রাঙাবিতানে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর শ্বশুর মশাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হলেও দুজনের দেখা হয়নি।

    গতবছর লাভপুরে জনসভা করতে এসে মমতা বলেছিলেন, কুসুম্বা গ্রামে আমি জন্মেছি। তার পর কলকাতায় চলে গিয়েছিলাম। ছোটবেলায় পরীক্ষা শেষ হলেই আমরা মামার বাড়ি চলে আসতাম। একমাস থাকতাম। গ্রামে ঘুরে বেড়াতাম, সাঁতার কাটতাম, ধান কাটতাম, গাছে চড়তাম। তবে কখনও চাকাইপুর যাইনি। এবার কুসুম্বা গেলে চাকাইপুর গ্রামটা ঘুরে আসব। 

    স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, গ্রামবাসী, মুখ্যমন্ত্রীর মামাতো ভাই নীহার মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী পম্পা মুখোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় চাকাইপুর গ্রামের প্রাচীন দুর্গামন্দিরটির সংস্কার হয়েছে। গত ২১ জুলাই কালীঘাটের বাড়িতে ‘দিদি’-র সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাত দিয়ে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের আবেদন জানান পম্পা ও গ্রামবাসীরা। দিদি আসবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। 

    আগামী ২৭ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূমে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। গ্রামবাসীরা চাইছেন, এই সময়েই দিদি মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করুন। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বলেন, চাকাইপুর গ্রামে কোনও হাইস্কুল নেই। পডুয়াদের ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তিন কিমি দূরের কুসুম্বা হাইস্কুলে যেতে হয়। আমরা গ্রামবাসীরা জায়গা দিতে প্রস্তুত। দিদির কাছে তাঁর নিজের গ্রামে একটা হাই স্কুল করে দেওয়ার আবেদন জানাব। • মুখ্যমন্ত্রীর বাবার বাড়ি রামপুরহাটের চাকাইপুর গ্রাম ঘুরে দেখছেন  মহকুমাশাসক সহ প্রশাসনিক কর্তারা।
  • Link to this news (বর্তমান)