• প্রাথমিক স্তরে কুড়মালিতে শিক্ষাগ্রহণে ইচ্ছুক কতজন জানতে চেয়ে চিঠি শিক্ষাদপ্তরের
    বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া জেলায় প্রাথমিক স্তরে কুড়মালি ভাষায় কতজন পড়াশোনা করতে চাইছে, সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষকদের কাছে রিপোর্ট চাইল স্কুল শিক্ষাদপ্তর। ইতিমধ্যেই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের চিঠি পৌঁছে গিয়েছে বিভিন্ন চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছে। পুরুলিয়া জেলায় শিক্ষাদপ্তরের এই পদক্ষেপকে নিজেদের আন্দোলনের জয় হিসেবেই দেখছেন কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন। এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও। 

    পুরুলিয়া জেলা শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) বিভিন্ন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে কুড়মালি ভাষাতে পঠনপাঠনের দাবি এসেছে। স্কুল শিক্ষাদপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর (গ্রামীণ) একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। সেই প্রস্তাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রাথমিক স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্টের উল্লেখ করতে হবে। প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে ওই স্কুলের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এবং তাদের মধ্যে কতজন কুড়মালি ভাষা শিখতে চায় তা জানাতে হবে। সেই সঙ্গে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের আরও জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় কুড়মালি জানা শিক্ষক কতজন রয়েছেন তাও জানাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে স্কুল মনিটরিং কমিটির এ বিষয়ে রেজ্যুলেশনও নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গত ২২ জুলাই এই সংক্রান্ত চিঠি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছে পাঠানো হয় বলে জেলা শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই কুড়মালি ভাষা সংক্রান্ত আন্দোলনে যুক্ত ব্যক্তি থেকে শুরু করে সামাজিক সংগঠনগুলি সাধুবাদ জানিয়েছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিতপ্রসাদ মাহাত বলেন, এটা সমাজের আন্দোলনের জয়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এসআই অফিসে এবং ডিআই অফিসেও ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল কুড়মালি ভাষাতে পঠনপাঠন শুরুর জন্য। তা মান্যতা পেতে চলেছে। শিক্ষাদপ্তরের এই উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাব। তবে কুড়মালি ভাষার জন্য আলাদা শিক্ষকও নিয়োগ করার দাবি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে সংগঠনের বৈঠক করা হবে। সেই সঙ্গে একটি ফর্ম ছাপিয়ে বিলি করা হবে। ওই ফর্মের মাধ্যমে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলগুলিতে অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে তাঁদের ছেলে মেয়েদের কুড়মালি ভাষাতে পঠনপাঠনের জন্য আবেদন করবেন। অন্যদিকে এ বিষয়ে কুড়মি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্য হংসেশ্বর মাহাত বলেন, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে কুড়মালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে কুড়মালি ভাষাতে পঠনপাঠনের সুযোগ হয়েছে। স্কুল স্তরেও কুড়মালি ভাষাতে পঠনপাঠনের দাবি দীর্ঘদিনের। রাজ্য সরকার সেই দাবিকেই মান্যতা দিতে চলেছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। দ্রুত এবিষয়ে প্রয়োজনে কুড়মালি ভাষার জন্য আলাদা প্যারা টিচার নিয়োগেরও দাবি জানাচ্ছি।
  • Link to this news (বর্তমান)