দামোদরে জলপ্রকল্পের ভেঙে পড়া ব্রিজ সারাই অসম্ভব, হাত গোটাচ্ছে সরকার
বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দামোদরে ভেঙে পড়া প্রকল্পের ব্রিজ নতুন করে তৈরি করে জল প্রকল্প স্বাভাবিক করা কার্যত অসম্ভব। ১৯৮৫ সালের সেই জল প্রকল্প থেকে কার্যত হাত গুটিয়ে নিচ্ছে সরকার। প্রতিদিন ১২ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ করা এই মেগা প্রকল্পের বিকল্প হিসাবে রিভারবেড টিউবয়েল করে প্রয়োজন মেটাতেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। যদিও উত্তাল দামোদরে কোনও ভাবেই এই সময়ে টিউবয়েল গড়া সম্ভব নয়। তাই পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে দফায় দফায় বৈঠক করছে পুরসভা ও জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে ঘটনার প্রতিবাদ শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচি করে বিজেপি। তাঁরা প্রশাসন ভবন মোড় থেকে মিছিল করে জেলাশাসক অফিস আসে। সেখান বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি জমা করে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালেই এই প্রকল্পের আয়ু শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিকল্প নতুন জল প্রকল্প না গড়ে ওঠার জন্যই এই প্রকল্পর মাধ্যমে জল সরবারহ হচ্ছিল জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ ও আসানসোলের একাংশজুড়ে। জানা গিয়েছে, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর মাইথন জলধারা থেকে জল আনার যে মেগা প্রজেক্টটি তৈরি করছে তাতে এই এলাকাগুলিতে জল দেওয়া হবে। প্রশাসনের পরিকল্পনা ছিল ওই প্রকল্প চালু হলে, এই প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হতো। কিন্তু তার আগেই পুরনো প্রকল্পটি ভেঙে পড়ায় সমস্যায় পড়েছে পুরসভা ও প্রশাসন। বৃহস্পতিবারই জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা পুরো এলাকাটি পরিদর্শন করে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছে। সেখানেই জানা গিয়েছে, ব্রিজ সংস্কার করে তা পুনরায় চালু করা কার্যত অসম্ভব এবং ব্যয়বহুল। ব্রিজের সার্পোটিং পিলারগুলি পাইলিং করে করা হয়নি। যার জেরে নদীর তলদেশে ওই অংশ থেকে বালি সরে যেতেই এই দুর্ঘটনা। পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণেরও অভাবও স্পষ্ট। এই অবস্থায় বিকল্প হিসাবে ওই এলাকাতেই রিভারবেডে টিউবয়েল বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় কিছু রিভারবেড টিউবয়েল থাকলেও তার বেশিরভাগই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। সেইগুলি সারিয়ে কার্যকরী করা ও নতুন টিউবয়েল বসানোই লক্ষ্য প্রশাসনের। যদিও ভরা বর্ষায় দুই কাজই করা কঠিন। তবু মানুষকে পরিস্রুত পানীয় জল সরবারহ করার তাগিদে জেলা প্রশাসন চাইছে দ্রুত সেই কাজ করতে।
জেলাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, রির্ভারবেড টিউবয়েল গুলি কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে ওখানে থেকে জল সংগ্রহ করে তা পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা যায়। স্থায়ী ভাবে সমস্যা মিটবে মাইথন জল প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে।
শুক্রবার পুরসভা কর্তৃপক্ষও পিএইচই, এমইডি ও পুরসভার নিজস্ব জল বিভাগকে নিয়ে বৈঠক করেছে। মেয়র, কমিশনার, ডেপুটি মেয়র থেকে মেয়র পরিষদ সদস্য ও বরো চেয়ারম্যানরা ছিলেন। বৈঠক শেষে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, রানিগঞ্জের চারটি ওয়ার্ড এই প্রকল্প থেকে জল পেত। পিএইচই বলেছে, অমৃতনগর প্রকল্প থেকে তাঁদের জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাকি এলাকায় জল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিন বিজেপি জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টচার্যর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধিরা এনিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে জেলাশাসক অফিসের সামনে সরব হন।-নিজস্ব চিত্র