• চিঠিতে ‘অসম্মানের জবাব’ লিখে আত্মহত্যা কাঁথির নবম শ্রেণির ছাত্রর
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ জুলাই ২০২৫
  • কিশোরীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাঝরাস্তায় হেনস্থা। পরদিন বাড়ি থেকেই উদ্ধার নবম শ্রেণির ছাত্রের দেহ। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির পিছাবনী এলাকার ঘটনা। মৃতের বয়স ১৫। মৃতের ঘর থেকে একটি চিরকুট মিলেছে। তাতে বাবার উদ্দেশে কিশোর লিখেছে, সে কোনও খারাপ কাজ করেনি। মিথ্যা অভিযোগে সকলের সামনে তাকে হেনস্থা করা হয়েছে। অপমান সইতে না পেরে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছে সে।

    অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিল ওই ছাত্র। অভিযোগ, স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য করে সে। যদিও ওই কিশোরের দাবি, সে ওই মেয়েটিকে চেনে না এবং কিছুই বলেনি। এরপর স্কুল থেকে ফেরার পর বই আনতে বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বেরোয়। ফেরার পথে পিছাবনীর বাজারে তাকে আটকে রেখে কয়েক জন বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে ছাত্রের বাবা-মাকেও ডেকে পাঠানো হয়।

    ছেলেকে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তার বাবা-মা। অবশেষে তাঁরা ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। বাড়ি ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই কিশোর। বাবা-মাকে বার বার সে জানায়, ওই নাবালিকাকে সে চেনে না এবং সে কোনও কটূক্তিও করেনি। এরপরে শুক্রবার সকালে দোতলার ঘর থেকে নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘরে একটি চিরকুটও মিলেছে। ওই চিঠিতে ছেলেটি লিখেছে, তাকে অপবাদ দেওয়া হয়েছে। বিনা অপরাধে দোষী বলছে সকলে।

    মৃত ছাত্রের বাবা বলেন, ‘ছেলে বার বার নিজেকে নির্দোষ বলেছিল। কিন্তু ওই ছাত্রীর পরিবার ও পরিচিতেরা মিলে ওকে খারাপ খারাপ কথা বলে। সেই অপমানে নিজেকে শেষ করে দিল ও। আমার ছেলের আত্মহত্যার নেপথ্যে ওই মেয়েটির বাবা দায়ী। মেয়ের বাবা বাজারের কিছু লোকজনকে নিয়ে এসে আমার ছেলেকে আটকে মারধর করেন। মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। ছেলে লিখে গিয়েছে সেই কথা।’

    যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাবালিকার বাবা। ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। জানতে পেরে মেয়েকে নিয়ে সরে যাই। ছাত্রকে কে বা কারা ঘিরে ধরেছিল, সেটা আমার জানা নেই।’ কাঁথি থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)