৩১ জুলাই কলকাতার সব পুজো কমিটিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ জুলাই ২০২৫
আসন্ন দুর্গাপুজো ঘিরে রাজ্য সরকারের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। প্রতিবারের মতো এবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পুজোর প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয় বৈঠক। আগামী ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে চলা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের প্রশাসনিক শীর্ষকর্তারা, কলকাতা পুরসভা, দমকল, সিইএসসি, স্বাস্থ্য, পরিবহন ও পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু হচ্ছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব শারদোৎসব। পুজো কমিটিগুলি ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
প্রতিবছরের মতো এই বছরও বৈঠকে দুর্গাপুজোর জন্য সরকারি অনুদান ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ঘোষণার দিকেই নজর রয়েছে রাজ্যের হাজার হাজার পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের। পুজোর আগে এই বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পুজো কমিটিগুলিকে একাধিক নির্দেশ ও অনুরোধ জানিয়ে থাকেন। এর মধ্যে থাকে শব্দবিধি মেনে চলা, পরিবেশবান্ধব পুজোর আয়োজন, যানজট ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-প্রশাসনকে সহযোগিতা এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ উৎসব আয়োজনের বার্তা।
এবছরের বৈঠকের একটি বিশেষ দিক হল – বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান ও শিখ সহ একাধিক সম্প্রদায় থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি বৈঠকে থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে দুর্গাপুজোকে সর্বজনীন উৎসব হিসেবে আরও বেশি করে তুলে ধরা যায়। সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
বৈঠকে বিদ্যুৎ, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও নিরাপত্তার বিষয়গুলি বিশেষভাবে আলোচনা করা হবে। উৎসবের সময়ে যাতে কোনও পরিষেবার ঘাটতি না হয়, সেই বিষয়ে আগাম পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শুধু কলকাতা ও শহরতলি নয়, জেলার পুজো কমিটিগুলিকেও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, জেলার পুজো কমিটিগুলিকেও প্রযুক্তির মাধ্যমে (ভার্চুয়ালি) এই বৈঠকে সংযুক্ত করা হতে পারে।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে এক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আবহ গড়ে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি অনুদান, বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পিঙ্ক পুলিশ, স্বাস্থ্য পরিষেবা – প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুজোর সময় বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে থাকে প্রশাসন। এবারও সেই ধারা বজায় থাকবে বলেই আশা করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন থাকায় এই বছর মুখ্যমন্ত্রী বাড়তি কিছু ঘোষণা করতে পারেন বলেও জল্পনা ছড়িয়েছে উদ্যোক্তাদের মধ্যে।
এই বৈঠক থেকেই বাংলার সমস্ত পুজো কমিটিকে সরকারি অনুদানের কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েকবছর ধরে ধাপে ধাপে সেই অনুদানের আর্থিক অঙ্ক বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৪ সালে সেই অনুদানের অঙ্ক ছিল ৮৫ হাজার টাকা। এই বছর কি সরকারি অনুদান বেড়ে এক লক্ষ টাকা হবে? আগামী বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণার দিকে তাকিয়ে তাঁরা সকলে।