মাথাভাঙার বাসিন্দাকে NRC নোটিস! ‘আতঙ্কিত করা হচ্ছে বাঙালিদের’, পালটা তৃণমূলের
প্রতিদিন | ২৬ জুলাই ২০২৫
বিক্রম রায়, কোচবিহার: উত্তরকুমার ব্রজবাসী, অঞ্জলি শীলের পর নিশিকান্ত দাস। ফের কোচবিহারের মাথাভাঙার বাসিন্দার কাছে পৌঁছল এনআরসি নোটিস। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বছর পঁচাত্তরের ওই বৃদ্ধ। রাজ্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিক, চাইছেন তিনি।
নিশিকান্ত দাস বলেন, “নোটিসটা দেড়মাস আগে পাই। গুয়াহাটিতে প্রমাণপত্র নিয়ে গেলাম। উকিলের কাছে পরামর্শ নিলাম। বলছে এইগুলিতে হবে না। ১৯৫৮ সালের জমির কাগজ নিলাম। বলছে বাবার ভোটার তালিকা লাগবে। বাবা ৪৫ বছর আগে মারা গিয়েছেন। আমি ভোটার লিস্ট কোথায় পাব? আমরা এতদিনের বাসিন্দা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেন এবার। আমি তাঁকে ভালোমন্দ সঁপে দিলাম।” তাঁর আরও দাবি, “আমি গুয়াহাটিতে কাজে যাওয়ার পর বাংলাদেশি সন্দেহে ধরে নিয়ে গেল। কাগজপত্র দেখালাম বলে ছেড়ে দিল।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক চাপানউতোর। কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “আতঙ্কিত করা হচ্ছে বাঙালিদের। যাতে বিজেপির কাছে সকলে মাথানত করে দেয়। বাইরের রাজ্যে মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে। জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছে। এনআরসি বিজেপির মৃত্যুর কারণ হবে।” যদিও এই প্রসঙ্গে বিজেপির কোনও পালটা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, বাংলা মাতৃভাষা হওয়ায় ভিনরাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙালি হেনস্তার অভিযোগ উঠছে। বিশেষত বিজেপি শাসিত হরিয়ানা, গুজরাট, ওড়িশায় বাঙালিদের হেনস্তার অভিযোগ উঠছে সবচেয়ে বেশি। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। একেবারে পথে নেমে আন্দোলনে সরব হয়েছেন তিনি। একুশের শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে ‘ভাষা আন্দোলনে’র ডাক দেন। বীরভূম থেকে ভাষা আন্দোলনের সূচনা করবেন তিনি। ২৮ জুলাই বোলপুরে পদযাত্রা করবেন। তার আগে রবিবারই সেখানে পৌঁছে যাওয়ার কথা তাঁর। এই পরিস্থিতিতে আবার বেশ কয়েকজন বঙ্গবাসীর হাতে এনআরসি নোটিস পাওয়ার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই।